কংগ্রেসের ইস্তাহারে ‘স্বাস্থ্য পরিষেবায় অধিকার’-এর প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত। —ফাইলচিত্র।
ধীরে ধীরে হাতের তাস দেখাচ্ছেন রাহুল গাঁধী।
সকলের জন্য ন্যূনতম আয়, কৃষিঋণ মকুবের কথা কংগ্রেস সভাপতি রাহুল আগেই জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি ঘোষণা করেছেন, চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের কথাও। এ বার শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতেও নিজের নীতি স্পষ্ট করলেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর জবাব হিসেবে কংগ্রেসের ইস্তাহারে ‘স্বাস্থ্য পরিষেবায় অধিকার’-এর প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রের ইঙ্গিত। অর্থাৎ, কোনও ব্যক্তি যে কোনও হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা চাইতে পারবেন।
ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে আজ রাহুল জানান, ইস্তাহারে স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকার আইনের কথা ভাবছে কংগ্রেস। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়ের কথা ভাবছি— সকলের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা (হেলথকেয়ার) অধিকার আইন, স্বাস্থ্য খাতে জিডিপি-র তিন শতাংশ খরচ এবং চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো।’’
থাকতে পারে ইস্তাহারে
• স্বাস্থ্য পরিষেবা অধিকার আইন
• শহরে রোজগার নিশ্চয়তা আইন
• সকলের জন্য ন্যূনতম আয়
• কৃষিঋণ মকুব
• কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩% সংরক্ষণ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে এখন ভারতে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপি-র এক শতাংশের সামান্য বেশি অর্থ ব্যয় হয়। তার পরিবর্তে রাহুলের ৩% অর্থ খরচের প্রতিশ্রুতি অনেকখানি বেশি। ইস্তাহার তৈরির ভারপ্রাপ্ত নেতা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন— ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে খরচ দ্বিগুণ করে জিডিপি-র ৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকারের আইন আনা হবে। সরকারি হাসপাতালের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিনামূল্যে রোগ নির্ণয় পরীক্ষা, ওষুধের বন্দোবস্ত হবে। আরও বেশি মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ, মেডিক্যালের পড়ুয়াদের জন্য ঋণ, স্কলারশিপের বন্দোবস্তের পাশাপাশি বাড়ানো হবে চিকিৎসকের সংখ্যা।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মোদী সরকারের দাবি, তাঁরা শিক্ষা খাতে জিডিপি-র ৪% অর্থ ব্যয় করছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, সরকার যে দাবি করছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক কম ব্যয় হয়। এই পরিস্থিতিতে রাহুলের শিক্ষা খাতে জিডিপি-র ৫ থেকে ৬% খরচের প্রতিশ্রুতি অনেকটাই বেশি। একাধিক বার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাহুল বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, পড়াশোনার খরচ সরকারের বহন করা উচিত।
পুলওয়ামা হামলার পর প্রধানমন্ত্রী জাতীয়তাবাদের ঢেউ তুলতে চাইলেও রাহুল জানান, তিনি ভোট প্রচারে কর্মসংস্থানেই নজর দিতে চান। মোদীর আমলে কর্মসংস্থান নিয়ে পরিসংখ্যান ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে গত কালই সরব হয়েছেন ১০৮ জন অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী। তা নিয়ে রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘নমো কর্মসংস্থান নিয়ে তাঁর ব্যর্থতার অপরাধ ধামাচাপা দিতে সত্য আড়াল করতে চাইছেন।’’ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, ইউপিএ আমলে গ্রামীণ রোজগার সুনিশ্চিত করতে এনআরইজিএ প্রণয়ন হয়। শহরে রোজগার সুনিশ্চিত করতেও এমন আইনের কথা ভাবা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতাদের ব্যাখ্যা, শুধু মোদীকে আক্রমণ নয়। তাঁর দল ক্ষমতায় এলে কী করবে, তার দিশাও দিচ্ছেন রাহুল।
আজ রাতেই অসম, মেঘালয় নাগাল্যান্ড, সিকিম, তেলঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশ মিলিয়ে মোট ১৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। শিলচর থেকে লড়ছেন সুস্মিতা দেব।