‘আমি তো শুধু চৌকিদার বলছি, বাকিটা মানুষ বলছেন’

বিরোধীরা নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে লড়ছে। এ ভাবে কি হারানো যাবে বিজেপিকে?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৯ ০২:২০
Share:

প্রশ্নটা ছিল, প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলাটা কি ঠিক হচ্ছে? চটজলদি জবাব দিলেন রাহুল গাঁধী, ‘‘আমি তো শুধু চৌকিদার বলছি। বাকিটা তো মানুষ বলছেন।’’ হাতেকলমে সেটা করেও দেখালেন তিনি। পুরুলিয়ায় সভার মাঠের পাশে বসে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। ব্যারিকেডের ও-পারে থাকা জনতার উদ্দেশে গলা তুলে বললেন, ‘‘চৌকিদার...।’’ শতকণ্ঠে জবাব এল, ‘‘চোর হ্যায়।’’ কিন্তু আদালত তো মানেনি এ কথা— এ প্রসঙ্গ তোলায় কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘আদালত ছাড়ুন। তদন্ত তো হতে দিন। চুরি তো হয়েছেই। রাফাল বিমান কেনা নিয়ে সমান্তরাল ডিল তো হয়েছেই। অনিল অম্বানীর পকেটে টাকা গিয়েছে। একে চুরি না বলে অন্য কী বলব বলুন, আমি সেটাই বলব।’’

Advertisement

বিরোধীরা নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে লড়ছে। এ ভাবে কি হারানো যাবে বিজেপিকে? জনসভার ফাঁকে এবিপি গোষ্ঠীর বাংলা ও হিন্দি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহুল জানান, তাঁর মতে, কিছু বিরোধ হওয়াটা স্বাভাবিক। কংগ্রেসকেও তো তার লড়াইটা লড়তে হবে! তবে এর মধ্যেও মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, বিহার, ঝাড়খণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরে জোট হয়েছে। বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিই জিতবে। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস আসন পাবে। বাকি আসনও যাবে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির হাতে। কংগ্রেসকে সমর্থনের প্রশ্নে দক্ষিণে ডিএমকের প্রসঙ্গও ওঠে।

মোদী সম্পর্কে কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, ‘‘কৃষকেরা নরেন্দ্র মোদীকে খুব ভরসা করেছিলেন। মোদী বুঝতে পারছেন না তাঁর প্রতি দেশের ভরসা উঠে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী যা ছিলেন, তা আর নেই। শেষ হয়ে গিয়েছেন তিনি। সময়ের দিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে চলছেন (টাইম ল্যাগ)। ফলে বাস্তব ছবিটা বুঝতে পারছেন না। আর সেই জন্যই রেগে যাচ্ছেন তিনি।’’

Advertisement

আর বফর্স ও গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে মোদীর তোলা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজীব-পুত্রের জবাব, ‘‘পাঁচ বছর তো ওঁরাই ক্ষমতায় ছিলেন। তদন্ত করালেন না কেন?’’

নির্বাচন কমিশনের বারণ উপেক্ষা করে মোদী প্রচারে সেনাকে টানছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না— এই প্রসঙ্গে রাহুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দেখতেই তো পাচ্ছেন দু’রকম নিয়ম চলছে। চাপের মধ্যে রয়েছে সব।’’ প্রশ্ন উঠল, দুই কেন্দ্র থেকে কেন লড়ছেন রাহুল। এর আগে রাজীব ও সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল নিজেও প্রথম বার লড়েছিলেন অমেঠীতে। সেই অমেঠীকে ছেড়ে দেবেন? রাহুল জানালেন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেননি। ২৩-শের পরে সেটা ঠিক করবেন। তবে কেরল থেকেও লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একটা রাজনৈতিক বার্তা দিতে।

রাহুল প্রত্যয়ের সঙ্গে জানালেন, অর্থনীতিতে বড় বদল আনবে তাঁর ন্যায় প্রকল্প। সবচেয়ে গরিবদের হাতে টাকা যাবে। গব্বর সিং ট্যাক্সের চাপে বন্ধ রয়েছে কেনাকাটা। দিনে ২৭ হাজার যুবক কাজ খোয়াচ্ছেন। মানুষের হাতে টাকা গেলে কেনাকাটা শুরু হবে ফের। চালু হবে দোকান। চাঙ্গা হবে অর্থনীতি। সবটাই হতে পারে কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে। কত আসনে জিতবে কংগ্রেস? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে রাহুল বলেন, ‘‘সংখ্যা বলব না। সেটা দেশের মানুষ বলবেন।’’ তত ক্ষণে হেলিকপ্টার এসে গিয়েছে তাঁর। ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পুরুলিয়ার মাঠে বসে সাক্ষাৎকার দিয়ে চপারের দিকে এগোলেন রাহুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement