রতলামের জনসভায় নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি: পিটিআই
২০১৪-র মতো এখনও দেশের প্রতিটি ঘরে মোদী হাওয়া বইছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মধ্যপ্রদেশের রতলামে ভোট প্রচারে গিয়ে আজ এ নিয়ে বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ করেন তিনি।
গত লোকসভা ভোটের পর থেকে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোট ও উপনির্বাচনে বিজেপিকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। বিরোধীরা তো বটেই, মোদী হাওয়ার অস্তিত্ব নিয়ে বিজেপির ভিতর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল। লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী দলগুলি সেই প্রচারকে আরও তীব্র করে দিয়েছে। আজ এরই জবাব দিয়েছেন মোদী। এ দিন তাঁর মন্তব্য, ‘‘পন্ডিতেরা দাবি করেছেন, এ বারের ভোটে নাকি কোনও হাওয়া নেই। দিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের গালগল্প তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে এঁদের অনেকে বলছিলেন, কোনও হাওয়া নেই। তবে এ বার ভোট পড়েছে গত বারের থেকে বেশি। সেটাই তাঁদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’’ মোদী বলেন, ‘‘ওঁরা জানেন না, দুই ধরনের ভোটার এ বার রেকর্ড গড়ছেন। যুব সমাজের বন্ধুরা, যাঁরা প্রথমবার ভোট দিচ্ছেন। আর মা-বোনেরা, যাঁরা তাঁদের ভাইকে জেতাবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছেন। কারণ, তাঁদের ভাই ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করেছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, মহিলারা তাঁকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। কারণ, রান্নার গ্যাস আর বিদ্যুতের সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি। মোদীর মন্তব্য, ‘‘যখন মা-বোনেরা বাইরে বেরিয়ে আসেন, তখনও পন্ডিতেরা বুঝতে পারেন না, ঢেউ কোথা থেকে আসছে। আসলে (বিজেপির পক্ষে) ঢেউ আসছে এখন প্রতিটি বাড়ি থেকেই।’’
রাজীব গাঁধীর বন্ধু স্যাম পিত্রোদার সাম্প্রতিক ‘হুয়া তো হুয়া’ মন্তব্য নিয়ে এ দিন কংগ্রেস তথা গাঁধী পরিবারকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ‘হুয়া তো হুয়া’ শুধু একটা শব্দবন্ধ নয়, এটা কংগ্রেসের আদর্শ আর ঔদ্ধত্যের প্রকাশ। ‘হুয়া তো হুয়া’ দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসের জবাব। মোদী বলেন, ‘‘মহাভোজাল লোকেরা বলছেন এ সব কথা। আর মানুষ এখন মহাভেজাল লোকেদের বলছেন, বহুত হুয়া।’’ প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা, কমনওয়েলথ দুর্নীতি, কয়লা ও টু-জি কেলেঙ্কারির ঘটনা রাহুল গাঁধীর দল ক্ষমতায় থাকার সময়ে হয়েছে। আর তাঁরাই এখন বলছেন, হুয়া তো হুয়া।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মধ্যপ্রদেশের রতলামের বাসিন্দা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ধর্মেন্দ্র সিংহ চৌহান রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্যে আগুনের সঙ্গে লড়াই করে জীবন দিয়েছেন। আজ সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, ‘‘এক দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে। অন্য দিকে নামদারের পরিবার নৌবাহিনীর রণতরীকে বনভোজনের কাজে লাগিয়েছেন। এ নিয়ে যখন প্রশ্ন তোলা হল, বলা হল, হুয়া তো হুয়া। জঙ্গি ও মাওবাদীদের সঙ্গে লড়তে গিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ানেরা প্রাণ দিচ্ছেন। ওঁরা বলছেন, হুয়া তো হুয়া।’’
এ দিন কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেন, চাষিদের ঋণ মকুবের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস সরকার। মোদীর মন্তব্য, ‘‘ভগবানকেও ধোঁকা দিয়েছে কংগ্রেস।’’ ভোপালের কংগ্রেস প্রার্থী দিগ্বিজয় সিংহ তাঁর নিজের এলাকায় ভোট দিতে যাননি। মোদীর দাবি, কংগ্রেসে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই ভোট দেননি দিগ্বিজয়। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘এটা দিগ্বিজয় সিংহের ঔদ্ধত্যের প্রকাশ। যখন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, দেশের নাগরিকরা ভোট দিচ্ছেন, তখন দিগ্বিজয় ভোট দিলেন না। কারণ, তিনি ভয় পেয়েছেন।’’