—ফাইল চিত্র।
ছবি প্রকাশে বাধা দেওয়া হোক অথবা বিশেষ দৃশ্য বা সংলাপে কাঁচি— শিল্পের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ বারবারই উঠেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। লোকসভা ভোটের আগে তাই বিজেপিকে বয়কট করার আর্জি জানিয়ে বিবৃতি জারি করলেন সারা দেশের শতাধিক চলচ্চিত্র নির্মাতা। তাঁদের বক্তব্য, এমন সরকারকেই বেছে নেওয়ার সময় এসেছে, যারা দেশের সংবিধানকে সম্মান করবে, বাক্স্বাধীনতা রক্ষা করবে এবং অযথা সেন্সরশিপ জারি করা থেকে দূরে থাকবে।
ভোট দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে উৎসাহী করতে #ভোটকর প্রচার শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যেই ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগান তুলে যৌথ এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ১০৩ জন পরিচালক। যেখানে তথ্যচিত্র নির্মাতা আনন্দ পট্টবর্ধন, অঞ্জলি মন্টেরিয়ো, চলচ্চিত্র সমালোচক সিএস ভেঙ্কটেশ্বরন, তামিল পরিচালক ভেত্রি মারান ও মলয়ালি পরিচালক ও প্রযোজক আশিক আবুরা বলেছেন, ‘‘আমাদের দেশ এত কঠিন পরীক্ষার ভিতর দিয়ে আগে কখনও যায়নি। সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে বৈচিত্র ও ভৌগোলিক ভাবে দূরত্ব থাকলেও আমরা সব সময়ে একই দেশের মানুষ হিসেবে একজোট থেকেছি। কিন্তু এই সব কিছুই এখন ভাঙনের মুখে।’’ তাঁদের উপলব্ধি, বিচক্ষণতার সঙ্গে পরবর্তী সরকার নির্বাচন না করলে ফ্যাসিবাদ দাঁত-নখ বার করে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
ওই পরিচালকরা দাবি করেছেন, বিজেপি ও তার শরিক দলগুলি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। মুসলিম ও দলিতদের কোণঠাসা করতে তাণ্ডব চালিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক প্রচার চালিয়েছে। জাতীয়তাবাদ শব্দটিকে এরা তাস হিসেবে ব্যবহার করে। ওই শিল্পীরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিরোধী মত প্রকাশ করলেই তাঁকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ বলে দেগে দিয়েছে এই সরকার। এমনকি বিরোধিতা করায় যুক্তিবাদী, লেখক, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মীদের খুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যৌথ ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষকদের স্বার্থ সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছে এই সরকার। মোদী জমানায় এই দেশ যেন জনা কয়েক ব্যবসায়ীর নিজস্ব সম্পত্তি। ওই পরিচালকরা বলেছেন, ‘‘ভুল আর্থিক নীতির ফলে থমকে যাচ্ছে উন্নয়ন। অথচ ভুয়ো প্রচার ও বিপণনের চাকচিক্যে সাফল্যের মিথ্যা গল্প গেলানো হচ্ছে দেশের মানুষকে।’’ তাঁদের বক্তব্য, শিল্পের উপরে নিষেধাজ্ঞা বা সেন্সরশিপ জারি করে মানুষকে সত্যি থেকে দূরে সরিয়ে রাখছে সরকার। বিজেপির কৌশলই হল দেশকে ‘অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধে’ ব্যস্ত রাখা। সব শেেষ তাঁদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘বিজেপিকে আর এক বার সুযোগ দেওয়া গুরুতর ভুল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মারার শামিল।’’