মোদীর না-রাখা কথাই ন্যায়ের প্রেরণা: রাহুল

রাজ্য জুড়ে ছ’দিনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’ কর্মসূচি নিয়েছে হরিয়ানার প্রদেশ কংগ্রেস। তাতে যোগ দিতে শুক্রবার যমুনানগর জেলার ছোট শহর জগধ্রীতে পৌঁছেছেন রাহুল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

যমুনানগর (হরিয়ানা) শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪৮
Share:

মধ্যাহ্নভোজ: সভার মাঝে কিছু ক্ষণের বিরতি। শুক্রবার হরিয়ানার কার্নালে রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নরেন্দ্র মোদীই যে তাঁর প্রেরণা, সে কথা খোলাখুলিই স্বীকার করে নিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। শুক্রবার রাহুল জানালেন, তফাৎ শুধু এটুকুই— ২০১৪-র নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদী এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে প্রমাণ করেছেন, তা ‘মিথ্যা’ ছিল। আর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তিনি যে ‘ন্যায়’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সরকারে এলে কংগ্রেস তা অবশ্যই পালন করবে।

Advertisement

রাজ্য জুড়ে ছ’দিনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’ কর্মসূচি নিয়েছে হরিয়ানার প্রদেশ কংগ্রেস। তাতে যোগ দিতে শুক্রবার যমুনানগর জেলার ছোট শহর জগধ্রীতে পৌঁছেছেন রাহুল। সেখানে একটি জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘গত দু-তিন দিন ধরে মোদীর মুখটা শুধু দেখুন। সোমবার ঐতিহাসিক ‘ন্যায়’ প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে তাঁর অভিব্যক্তি বদলে গিয়েছে। কেঁপে গিয়েছেন উনি! কারণ, পাঁচ বছরে হাতে গোনা কয়েক জন শিল্পপতির মঙ্গল করা ছাড়া দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তিনি কিছুই করেননি।’’

সকলের জন্য রোজগারের অধিকার সুনিশ্চিত করা এবং দেশের সব চেয়ে গরিব ২০ শতাংশ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বছরে ৭২ হাজার টাকা করে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি রাহুল ঘোষণা করেছেন, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যায়’। কংগ্রেসের দাবি, গরিবি দূর করতে এই প্রকল্প ঐতিহাসিক ভূমিকা নেবে। রাহুল জানান, ২০১৪-য় ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— ১০০ দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে সব কালো টাকা উদ্ধার করে আনবেন। দেশের প্রত্যেক মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে জমা করে দেবে সরকার। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘আর একটা ভোট এসে গেল। কারও অ্যাকাউন্টে সে টাকা জমা হওয়ার খবর আছে?’’ রাহুল বলেন, ‘‘মোদী যে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা থেকেই ‘ন্যায়’-এর মতো একটি প্রকল্প তৈরির কথা আমার মাথায় আসে। কেন এমন একটি কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায় না, সরকারে এলে যা পালন করা যাবে?’’ কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে দলের ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা ছ’মাস পরিশ্রম করে এই ‘ন্যায়’ প্রকল্পটির খসড়া তৈরি করেছেন। রাহুল বলেন, ‘‘নির্বাচন আসলে দুই বিচারধারার লড়াই। এক দিকে বিজেপি, আরএসএস এবং নরেন্দ্র মোদীর ধনী শিল্পপতিদের কল্যাণ করার নীতি, অন্য দিকে দেশের সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া গরিব, বেরোজগার মানুষের স্বার্থ নিয়ে কংগ্রেস।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রাহুল বলেন, ‘‘১৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা বলে তিনি ক্ষমতায় এলেন। আর এসে কৃষিজীবীদের সঙ্গে অবিচার করলেন, নোটবন্দি করে ছোট ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের পথে বসালেন, সঙ্গে চালু করলেন গব্বর সিংহ ট্যাক্স বা জিএসটি। অসহায় কৃষকদের ঋণ মকুব হয় না, কিন্তু এই পাঁচ বছরে ১৫ জন শিল্পপতির সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছেন মোদী।’’ রাহুলের দাবি, এই ‘আসল সমস্যা’ থেকে নজর ঘোরাতেই ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক হানাহানির রাজনীতি করছে বিজেপি। এক সময়ে ‘অচ্ছে দিন’-এর স্লোগান দেওয়া মোদী এখন রাফাল বিমান কিনতে বিরাট গড়বড় করে ‘চৌকিদার’ সাজছেন। আর মানুষ বলছেন— ‘চৌকিদার চোর হ্যায়!’’

নয়াদিল্লিতে সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও রাহুল দাবি করেছেন— কংগ্রেসের ইস্তাহারে গরিব, খেটে খাওয়া মানুষের দাবির কথাই থাকবে, কোনও বিশেষ এক জনের সংকীর্ণ বিচারধারার প্রতিফলন সেখানে দেখা যাবে না। অমেঠীর পাশাপাশি রাহুল কি দ্বিতীয় কোনও আসন থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? প্রশ্নটি একেবারে উড়িয়ে দেননি কংগ্রেস সভাপতি। তবে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দলই সিদ্ধান্ত নেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement