—ফাইল চিত্র।
দুই পুলিশ কমিশনার-সহ চার আইপিএস অফিসারের অপসারণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পত্রযুদ্ধের মধ্যে কমিশনের আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কমিশন ঠিক করেছে, প্রথম দফার নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা আগে জেলা নির্বাচনী অফিসারদের ‘দূরে’ রেখেই ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবে তারা। আগামী বৃহস্পতিবার ২০টি রাজ্যে ৯১টি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন রয়েছে। তার মধ্যে আছে বাংলার দু’টি কেন্দ্র কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার। আজ, সোমবার ভিডিয়ো-সম্মেলনে ওই দু’টি আসন-সহ ৯১টি কেন্দ্রের সাধারণ পর্যবেক্ষক, খরচ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক এবং পুলিশ-পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) এবং তাঁর দফতরের আধিকারিকেরা ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।
ভিডিয়ো-সম্মেলনে জেলা নির্বাচনী অফিসার (জেলাশাসক) বা সেই অফিসের কোনও অফিসারের থাকার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে কমিশন। ওই বৈঠকে তারা জানতে চাইবে: ফোটো ভোটার স্লিপ বিলি, ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের বন্দোবস্ত কী হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের কী অবস্থা এবং ক’টি ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের অবস্থা এবং তার সঙ্গে ভোটারদের আত্মবিশ্বাস জোগানোর জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির সবিস্তার তথ্যও জানতে চাওয়া হবে। এ ছাড়া, সুবিধা অ্যাপ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা-সমিতির আবেদনের ক্ষেত্রে কতটা কী নজরদারি হয়েছে, জানাতে হবে তা-ও। চাওয়া হবে রাজনৈতিক সভা-সমিতি ও প্রার্থীদের প্রচার-ব্যয়ের সবিস্তার তথ্য। এ প্রসঙ্গে উঠে এসেছে ‘শ্যাডো অবজার্ভেশন রেজিস্টার’-এর কথা। খরচের উপরে নজরদারি চালাতে কমিশন নিজেদের মতো করে হিসেব রক্ষা করে। পরে যাতে রাজনৈতিক দলগুলির দেওয়া হিসেবের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যায়। এটাই ‘শ্যাডো অবজার্ভেশন’।
আজকের বৈঠকে কী কী করা হবে বা করা হবে না, তার খুঁটিনাটি ঠিক করে দিয়েছে কমিশন। যেমন সব কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে ‘স্টেটাস নোট’ জমা দিতে হবে। সেই নোটে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আনতে হবে কমিশনের নজরে। এই বিষয়ে বলতে প্রত্যেক পর্যবেক্ষকের জন্য দু’মিনিট ধার্য করেছে কমিশন। তারা জানিয়ে দিয়েছে, বৈঠক চলাকালীন চা ও খাবার পরিবেশন করা হবে না। এমন একটি বৈঠক থেকে জেলা নির্বাচনী অফিসারদের দূরে রাখা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। যাঁরা নির্বাচনের যাবতীয় বিষয় রূপায়ণের দায়িত্বে, সেই জেলা নির্বাচনী অফিসারদের বৈঠক থেকে সরিয়ে রাখা হল কেন, এই প্রশ্ন ঘুরছে প্রশাসনিক মহলে।