ভোট না দেওয়ায় দিগ্বিজয় সিংহকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি
তিনি নিজে ভোপাল কেন্দ্রের কংগ্রেসের প্রার্থী। ভোট প্রচারে সবাইকে বলে বেড়িয়েছেন, সকাল সকাল বুথে গিয়ে ভোট দেবেন। কিন্তু বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ নিজেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন না। এ বার সেটাকেই ভোট প্রচারে হাতিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মধ্যপ্রদেশেই নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে দিগ্বিজয়ের উদ্দেশে মোদীর মন্তব্য, ভোট না দিয়ে আপনি বিরাট ‘পাপ’ করেছেন।
ভোপাল কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী দিগ্বিজয় সিংহ। তবে তাঁর ভোট নিজের গ্রাম রাজগড় লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রঘোগড়ে। ষষ্ঠ দফায় রবিবার এই দুই কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ ছিল। দিগ্বিজয় সিংহ রবিবার সারা দিন নিজে যে কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন, সেই ভোপালের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভোট দিতে নিজের গ্রামে যাননি। তা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছিলই।
তার মধ্যেই সোমবার মধ্যপ্রদেশের রতলামে ছিল প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভা। এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সপ্তম তথা শেষ দফায়। এই সভা থেকেই দিগ্বিজয়কে তীব্র আক্রমণ করেন মোদী। বলেন, ‘‘যাঁরা ২১ শতকে দেশের ভাগ্য নির্ধারণে যাঁরা ভোট দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের কি আপনি (দিগ্বিজয় সিংহ) এটাই শেখাচ্ছেন? এটাই বোঝাতে চাইছেন যে ভোট গুরুত্বপূর্ণ নয়? দিগ্গি রাজা, আপনি বিরাট পাপ করেছেন।’’
এমনিতেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত মোদী। তার উপর হাতে এই রকম অস্ত্র পেয়ে তেতে যান মোদী। কংগ্রেসকে নিশানা করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সারা দেশ যখন গণতন্ত্রের উৎসব পালন করছে, তখন ভোপালে ওদের (কংগ্রেস) ঔদ্ধত্য দেখা গিয়েছে। আমি নিজে আমদাবাদে গিয়েছিলাম ভোট দিতে। দেশের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। আর দিগ্গি রাজা, উনি গণতন্ত্র, নাগরিক তথা ভোটারের দায়িত্বের পরোয়া করেন না।’’
আরও পডু়ন: ১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা-ইমেল ব্যবহার করতাম, দাবি মোদীর! হাসির বন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায়
আরও পড়ুন: গাড়িতে টানা তল্লাশি, প্রতিবাদে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে বসে পড়লেন ডায়মন্ডহারবারের বিজেপি প্রার্থী
কিন্তু কেন ভোট দেননি? কী করছিলেন দিগ্বিজয়। সে প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন মোদী। দিগ্বিজয়কে নিশানা করে মোদীর দাবি, ‘‘ভোপালের মানুষজনকে তিনি ডেকে ডেকে বলছিলেন, ‘আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান’। উনি শুধু কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, ভোপালের মানুষ ওঁকে না বাঁচালে উনি চাকরি খোয়াবেন। আর সেটা করতে গিয়ে ভোটের গুরুত্বই দেননি।’’
কয়েক মাস আগেই মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠন করেছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন কমল নাথ। দিগ্বিজয়কে আক্রমণের পাশাপাশি কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন মোদী। তিনি বলেন, আপনার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ থাকতে পারে। দিগ্গি রাজা, এটা হতেই পারে, রাজগড়ের কংগ্রেস প্রার্থীকে আপনার পছন্দ নয়, এমনকি, আপনার ঘরেও দ্বন্দ্ব চলছে। কিন্তু সেটা ভুলে অন্তত বুথের ভিতরে গিয়ে বেরিয়ে আসতেন, ভোট দিতেন না।’’