লোকসভা ভোটের থিম সং প্রকাশ করল কংগ্রেস।
নরেন্দ্র মোদীর জাতীয়তাবাদ এবং মেরুকরণের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের তুরুপের তাস ‘ন্যায়’। ইস্তাহারের পর দলের থিম সং-এও গরিবদের ন্যূনতম আয়ের প্রতিশ্রুতির সেই প্রকল্পকেই হাতিয়ার করলেন রাহুল গাঁধী। রবিবার প্রকাশিত হওয়া দলের থিম সং এবং স্লোগানের মূল কথা ‘এবার হবে ন্যায়’। প্রকাশের আগেই যদিও বিতর্কে জড়িয়েছিল কংগ্রেসের এই প্রচার ভিডিয়ো। একটি অংশে নিয়ে আপত্তি করেছিল নির্বাচন কমিশন। শেষ পর্যন্ত সেই অংশ ছেঁটে ফেলে রবিবার প্রকাশিত হল কংগ্রেসের নির্বাচনী থিম সং তথা স্লোগান ‘আব হোগা ন্যায়’।
ক্ষমতায় এলে দেশের গরিবতম অংশের পরিবার পিছু বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ন্যূনতম আয় যোজনা বা ‘ন্যায়’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন রাহুল গাঁধী। তাতে বিজেপির জাতীয়তাবাদের হাওয়া অনেকটাই কংগ্রেসের দিকে টেনে নিতে পেরেছেন। নির্বাচনী ইস্তাহারেও এই ‘ন্যায়’ প্রকল্পকেই পাখির চোখ করেছে কংগ্রেস। পাশাপাশি ছিল চাকরি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা প্রতিশ্রুতি। থিম সং এবং স্লোগানেও তারই ছায়া।
এক মিনিটের এই ভোট প্রচারের ভিডিয়োটির গীতিকার জাভেদ আখতার। ভিডিয়োগ্রাফির দায়িত্বে ছিলেন বলিউডের চিত্র পরিচালক নিখিল আডবাণী। মূল উপজীব্য, সমাজের সব শ্রেণির, সব স্তরের, সব বয়সের মানুষ। যাঁদের সঙ্গে গত পাঁচ বছরে বিজেপি তথা মোদী সরকার অন্যায় করেছে। উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে কৃষকের দুর্দশা, বেকারত্ব, মিথ্য প্রতিশ্রুতি, নাম বদলের হিড়িক, নোট বদলের মতো ইস্যু। অর্থাৎ বিজেপির জমানায় ‘অন্যায়’ হয়েছে। এই সব অন্যায়ের বিরুদ্ধেই সব শ্রেণির মানুষকে এ বার ‘ন্যায়’ দেবে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক ক্ষমতাই প্রয়োগ করেছি, অভিযোগ দুর্ভাগ্যজনক, মমতাকে পাল্টা চিঠি কমিশনের
আরও পডু়ন: কংগ্রেসকে ভোট দিলে বিজেপির সুবিধে, দেওবন্দে মুসলিমদের মহাজোটে ভোট দিতে আহ্বান মায়ার
বিশাল বিশাল কন্টেনার ট্রাকে জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে এই থিম সং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচারের কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস। দলের নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকারের অকর্মণ্যতা, ব্যর্থতাই সাধারণ মানুষের প্রধান আলোচনা হয়ে উঠেছে। গরিব-মধ্যবিত্তের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। গরিবদের প্রতি সুবিচার করা হয়নি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘গণতন্ত্রের মূল ভিত্তির উপর আঘাত করা হয়েছে।’’
নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার পর কোনও প্রচার ভিডিয়ো প্রকাশ করার আগে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হয়। পাশাপাশি চূড়ান্ত ভিডিয়ো তৈরির পর কমিশনকে দেখানোও দস্তুর। কমিশনের মিডিয়া সার্টিফিকেশন এবং মনিটরিং কমিটি (এমসিএমসি) সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই তা প্রকাশ করা যায়। আর সেখানেই আটকে গিয়েছিল কংগ্রেসের এই ভিডিয়ো। কমিশন অভিযোগ তুলেছিল, প্রচার ভিডিয়োর একটি অংশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। তাই ওই অংশ বাদ দিতে বলা হয়। সেই মতো ওই অংশ বাদ দিয়েই ভিডিয়োটি প্রকাশ করেছে কংগ্রেস।