ছবি: পিটিআই।
আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একাধিক বার ক্লিনচিট দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সরব হল কংগ্রেস। দলের প্রশ্ন, একই অভিযোগে বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ যেখানে শাস্তি পান, সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে কেন ছাড় দিচ্ছে কমিশন? কংগ্রেসের দাবি, বিরোধী বা বিজেপির অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিলেও, মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের নামে অভিযোগ উঠলেই নিজের দায়িত্ব পালন করতে ভুলে যায় কমিশন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, সোমবারের মধ্যে নিষ্পত্তি করে ফেলতে হবে মোদীর নামে থাকা আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার সবক’টি অভিযোগ। তাই আজ রাতে তড়িঘড়ি মোদীর নামে থাকা দু’টি মামলায় ফয়সালা করে কমিশন। যথারীতি আগেরগুলির মতোই মোদীর বিরুদ্ধে এ বারও বারাণসী ও নানদেদের জনসভার বক্তব্যে আচরণবিধির ভাঙার প্রমাণ খুঁজে কমিশন। সব মিলিয়ে পাঁচটি মামলায় মোদীকে ছাড় দিল কমিশন। মোদীর সঙ্গেই আজ একটি অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন অমিত শাহ। কংগ্রেস অভিযোগ
করেছিল, ২২ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগরের জনসভায় অমিত বলেছিলেন, পুলওয়ামা হামলার ১৩ দিনের মাথায় মোদীর বিমানবাহিনী গিয়ে বালাকোটে হামলা চালায়। ‘মোদীর বিমানবাহিনী’ বলে কোনও আদর্শ আচরণবিধি শাহ ভাঙেননি বলেই জানিয়েছে কমিশন।
গত এক মাসে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার প্রায় ডজনখানেক অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের ঘরে। চার দফা ভোট কেটে যাওয়ার পরে কমিশনের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে কংগ্রেস সুপ্রিম কোর্টে গেলে দ্রুত প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে শুরু করে কমিশন। ওয়ার্ধায় রাহুল গাঁধী সংক্রান্ত ও লাতুরে বালাকোট হামলার নামে ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নামে আচরণবিধি ভাঙার যে অভিযোগ উঠেছিল সেই দু’টি ক্ষেত্রেই তাঁকে ক্লিনচিট দেয় কমিশন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের দাবি, দু’টি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি ক্লিনচিট দেওয়ার বিপক্ষে ছিলেন এক নির্বাচন কমিশনার। কংগ্রেসের দাবি, ওই কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে অন্তত সতর্ক করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেও, তা খারিজ করে দেন বাকি দু’জন। চলতি নির্বাচনে কমিশনের মনোভাব নিয়ে শুধু কংগ্রেসই নয়, বহু প্রাক্তন আমলা ও একাধিক প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারও সরব হয়েছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহ প্রশ্নে কমিশন যে গা-ছাড়া মনোভাব নিয়ে চলেছে তাতে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে আমজনতার মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলেই মনে করেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। তাঁর মতে, এ বার অনেকটাই বিশ্বাসযোগ্যতা খুইয়েছে কমিশন।
এই নিয়ে অভিযোগ জানাতে আজ ফের কমিশনের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল ও অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী দিনে মোদীর বিরুদ্ধে যে আট-ন’টি আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ রয়েছে তাতেও যদি সরাসরি ক্লিনচিট দেওয়া হয়, তা হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে তারা।