প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় সরব হলেন ভীম সেনার প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। —ফাইলচিত্র।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে দিল্লি এসেই আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনায় সরব হলেন ভীম সেনার প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। যন্তর-মন্তরে ঘোষণা করলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বারাণসী থেকে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন তিনি। বাকি সব বিরোধী দলের সমর্থন আশা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে আজাদের মন্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলেন। এ বার তা বুঝবেন নরেন্দ্র মোদী।’’
চলতি সপ্তাহে ভোটবিধি ভঙ্গের অভিযোগে চন্দ্রশেখর আজাদ ওরফে রাবণকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পরে শারীরিক কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন আগে সেখানে গিয়ে আজাদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সূত্রের খবর, অমেঠীতে এ বারও রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চলেছেন বিজেপির স্মৃতি ইরানি। আজাদ চাইছিলেন স্মৃতির বিরুদ্ধে ভীম সেনার প্রার্থী দিতে। সূত্রের মতে, এতে যে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেটাই আজাদকে বুঝিয়ে এসেছেন প্রিয়ঙ্কা। ভিম সেনা সূত্র জানিয়েছে, প্রিয়ঙ্কার অনুরোধ মেনে শেষ পর্যন্ত স্মৃতির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবেন না বলে স্থির করেছেন আজাদ।
কংগ্রেস স্বস্তি পেলেও ঘোর অস্বস্তি তৈরি হয়েছে মায়াবতী শিবিরে। তাদের আশঙ্কা, বিএসপির ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতেই কংগ্রেসের সঙ্গে ভীম সেনার এই নতুন বন্ধুত্ব। উত্তরপ্রদেশে বিএসপির অস্বস্তি আজ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন আজাদ। ঘোষণা করেছেন, উত্তরপ্রদেশে যেখানে এসপি-বিএসপি জোটের প্রার্থী দুর্বল, সেখানে বিজেপি-বিরোধী অন্য প্রার্থীকে সমর্থন করবে তাঁর দল। সরাসরি না বললেও বার্তাটি স্পষ্ট, কংগ্রেসের প্রার্থীদের সমর্থন করবে ভীম সেনা। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ তাদের শক্ত ঘাঁটি। আজাদের লড়াকু ভাবমূর্তির কারণে দলিত যুব সমাজের মধ্যে ভীম সেনার প্রতি প্রবল আনুগত্য রয়েছে। তা যদি ভোটে পরিবর্তিত হয়, সে ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশে বিএসপির দলিত ভোটে ভাঙন ধরতে বাধ্য। মূলত সমস্যায় পড়বেন বিএসপির প্রার্থীরা। কিন্তু ক্ষতি হবে এসপি-বিএসপি জোটেরও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আজাদ যে মোদীর বিরুদ্ধে লড়বেন এ জল্পনা বেশ কিছু দিন ধরেই ছিল। আজ নিজের মুখে সে কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদী দলিত বিরোধী। গণতন্ত্রে মানুষ যে শেষ কথা, সেটা বোঝাতেই বারাণসীতে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বারাণসীতে মোদী-বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না-হয়, তার জন্য অন্য দলগুলির কাছে আবেদনও করেছেন আজাদ। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা উত্তরপ্রদেশের ৭৯টি আসনে বিজেপি-বিরোধী প্রার্থীদের সমর্থন করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার বদলে বারাণসী কেন্দ্রে সব ক’টি বিরোধী দল আমাকে সমর্থন করবে— এটাই আশা করব।’’
মোদীর দলিত প্রেম প্রসঙ্গে আজাদের মন্তব্য, ‘‘আমি বারাণসী থেকে দাঁড়াব শুনেই, মোদী কুম্ভে কর্মরত সাফাইকর্মীদের পা ধুইয়ে দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নেন। গোটাটাই লোক দেখানো।’’