মধ্যরাতে অসম রাজনীতিতে নাটকীয় ভোলবদল। নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে জোট সরকার ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া অসম গণ পরিষদ (অগপ) ফের সরকারে ফিরছে। পদত্যাগী তিন মন্ত্রীর ইস্তফা পত্রও মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে অগপ ফের বিজেপির হাত ধরল। অবশ্য অগপ নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত নিজের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানতেন না। সমর্থনও করছেন না।
অগপ সভাপতি অতুল বরা ও পদত্যাগ করা বাকি দুই মন্ত্রী গত বেশ কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে বিজেপি নেতাদের কাছে জোটে ফেরার জন্য দরবার করছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, নেডার আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎ দাসরা গত কাল সন্ধ্যে পর্যন্ত বলেছেন, বিজেপি আর অগপর সঙ্গে জোট চায় না। রাতে গুয়াহাটির হোটেলে বিজেপি সাধারণ সম্পাদক রাম মাধবের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের পর অগপ নেতাদের সঙ্গে বসেন রাম মাধব। রাত ১টা নাগাদ টুইটে বিজেপি নেতা ঘোষণা করেন, লোকসভায় ভোটে অগপ-বিজেপি জোট বাঁধছে। অগপর তিন মন্ত্রী পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।
আজ মুখ্যমন্ত্রী আবাস থেকে পদত্যাগপত্র ফেরত নিয়ে অতুল বরা, কেশব মহন্ত ও ফণীভূষণ চৌধুরিরা জনতা ভবনে গিয়ে ফের স্ব-স্ব দফতরের দায়িত্ব নেন। অতুল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরেছি। তবে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অবস্থান বদলাচ্ছি না। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সূত্র বেরোবে।” দলীয় সূত্রের খবর, অগপ লোকসভায় তিনটি আসন চেয়েছে। হিমন্ত বলেন, “১৬ মার্চ দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে আসন রফা চূড়ান্ত হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রফুল্ল মহন্ত অবশ্য বলেন, “২০১৬ সালে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ার সময়েও দল আমায় জানায়নি, গত কাল রাতেও আমায় না জানিয়েই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ভাবে কয়েকজন নেতা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।’’ দলের এই সিদ্ধান্তে অগপ নেতা লাচিত বরদলৈ আজ দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কৃষক সংগ্রাম সমিতির নেতা অখিল গগৈ অগপ-র বিশ্বাসঘাতকতার কথা বলছেন। কংগ্রেস মুখপাত্র প্রদ্যোৎ বরদলৈ বলেন, অগপ নেতাদের দু’মুখো চেহারাই তাদের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিল।