মায়ার মুখে কুলুপ, ভাষণ পাঠ ভাইপোর

মায়া নিজে কোনও সভায় গেলে লেখা পাতা নিয়ে যান ও সেটাই পড়ে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২৬
Share:

ছবি: পিটিআই।

ভোট-যুদ্ধের মধ্যে পাক্কা দু’দিন মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে হবে! মায়াবতীর লোক-লস্কর দৌড়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু শীর্ষ আদালতও আজ জানিয়ে দেয়, ছাড় মিলবে না। নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জেগেছে। ভোটের আচরণবিধি ভাঙার জন্য তারা যে শাস্তি দিয়েছে, তাতে পূর্ণ সমর্থন আছে বিচারপতিদের। অগত্যা মায়ার ভরসা ভাইপো, বছর ২৪-এর আকাশ আনন্দ! আজ আগরার সভায় তাঁকেই পাঠিয়েছিলেন বিএসপি নেত্রী।

Advertisement

মায়া নিজে কোনও সভায় গেলে লেখা পাতা নিয়ে যান ও সেটাই পড়ে দেন। দেখা গেল, আকাশও পাতা দেখে ভাষণ দিলেন। সন্দেহ নেই, মায়ার যা বলার ছিল, সেটাই শুনলেন মানুষ। বদল শুধু মুখে। অবশ্য তফাৎ ছিল আর একটু। সেটা ভাষণের মুখবন্ধে। সভামঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন এসপি নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলশ যাদব, রাষ্ট্রীয় লোকদলের অজিত সিংহ, বিএসপির এস সি মিশ্র। মিশ্র নিজের ভাইপো হিসেবেই উল্লেখ করেন আকাশকে। আকাশ বলতে শুরু করেন এ ভাবে, ‘‘‘দলে দলে মানুষ আজ এখানে এসেছেন আমার বুয়ার জন্য। আমি কৃতজ্ঞ। আমারই সিনিয়র নেতারা মঞ্চে বসে রয়েছেন। আমি প্রথম বারের জন্য আপনাদের সামনে এলাম। আমার কথা আপনারা শুনবেন তো?’’

এটুকু ভূমিকা অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল। রাজনীতির উঠোনে হালেই মুখ দেখা যাচ্ছে মায়াবতীর এই ভাইপোর। গত ১৫ জানুয়ারি, মায়ার জন্মদিনে দেখা করতে গিয়েছিলেন অখিলেশ। সে সময় প্রায় অচেনা একটি নবীন মুখ দেখা গিয়েছিল পিছনে। জানা যায়, তিনি মায়ার ভাইপো আকাশ। পরে ৭ এপ্রিল দেওবন্দে এসপি-বিএসপি-আরএলডির যৌথ সভাতেও হাজির ছিলেন আকাশ।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মঞ্চে মুখ খোলার সুযোগটা এসে গেল বুয়ার শাস্তির কারণে। আগামী ১৮ তারিখ এই এলাকায় ভোট। আগরা, ফতেপুর সিক্রি এবং মথুরা লোকসভা নির্বাচনী কেন্দ্রের বিরোধী জোট প্রার্থীদের উপস্থিত জনতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন মায়াবতীর ভাইপো। বিবৃতি পাঠ করে তাঁদের হয়ে ভোট চেয়েছেন। তবে এ কথা বলতেও ছাড়েননি, ‘‘জয়লাভ করলেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের মুখের মতো জবাব দেওয়া সম্ভব হবে।’’

দেওবন্দের সভায় মুসলিম ভোটারদের কংগ্রেসকে ভোট না-দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন মায়া। জাতপাত-ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাওয়াটা সাংবিধানিক ভাবে অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও। দেওবন্দে গত ৭ তারিখের ভাষণের জন্য তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তার পরেও পরে ‘আলি-বজরংবলী— দুইই বিএসপির’ বলে দাবি করেন দলিত নেত্রী। গত কাল কমিশন নির্দেশ দেয়, দু’দিন প্রকাশ্যে কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে পারবেন না মায়াবতী। ভাষণ বা পথসভা তো নয়ই, সাক্ষাৎকার দেওয়াও চলবে না। মায়া অভিযোগ আনেন, সেনার নামে ভোট চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। (বিজেপির) চাপের মুখে কমিশন তাঁর মুখে কুলুপ এঁটে দিল।

এই নির্দেশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আজ এক দফা নাটক চলে। বিএসপির আইনজীবী কমিশেনের নির্দেশ বিরুদ্ধে যুক্তি পেশ করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে আমাদের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন জেগেছে। বিভিন্ন মেয়াদের জন্য নেতাদের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতেই স্পষ্ট যে, এ বিষয়ে আদালতের তরফে আর কোনও নির্দেশ জারির প্রয়োজন নেই।’’

এর জেরেই আকাশের ওই ‘ভাষণ-পাঠ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement