লালকৃষ্ণ আডবাণী। ফাইল চিত্র।
গাঁধীনগর আসনে অমিত শাহের নাম ঘোষণার পরেই বাজি ফাটছে গুজরাতে। উৎসবে মেতেছেন বিজেপি কর্মীরা। কাল রাত থেকেই এমন ছবি তুলে ধরতে মরিয়া বিজেপি। এমনকি, লালকৃষ্ণ আডবাণীকে সরিয়ে অমিতের নাম গতকাল ঘোষণার আগেই দিল্লিতে ডেকে নেওয়া হয়েছিল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে। যাতে গুজরাতের নেতৃত্ব ‘স্বাগত’ জানাতে পারেন শাহকে।
বিজেপির প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। আডবাণী এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। আর কংগ্রেসের তরফে বারবার খোঁচা দেওয়া হচ্ছে যে, দলের ‘মার্গদর্শক’কেই জোর করে বিদায়ের রাস্তা দেখিয়েছে বিজেপি। তা হলে দেশের জনতাকে তারা আর কী সম্মান দেবে?
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির তরফে দাবি করা হচ্ছে, খোদ আডবাণীই ভোটে লড়তে চাননি। তাঁর পুত্র বা কন্যা ভোটে লড়বেন কি না, সে ব্যাপারেও মত চাওয়া হয়েছিল। তাতেও মানা করে দিয়েছেন আডবাণী। বিজেপি এমনও দাবি করছে, নাম ঘোষণার পর অমিত শাহকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন বিজেপির প্রবীণ নেতা। কারণ, বিজেপির ইতিহাসে এটাই প্রথম নির্বাচন, যেখানে নিঃশব্দে পালাবদল হতে চলেছে। গাঁধীনগর থেকে আডবাণীকে প্রার্থী করা হল না। মুরলী মনোহর জোশীকে প্রার্থী করাও অনিশ্চিত। যদি শেষ পর্যন্ত তেমন ঘটনাই ঘটে, তা হলে জনসঙ্ঘের আমলের কোনও নেতা এই প্রথম ভোটে লড়বেন না।
১৯৯১ সালে গাঁধীনগর কেন্দ্র থেকে লালকৃষ্ণ আডবাণী যখন মনোনয়ন পেশ করছেন, পাশে নরেন্দ্র মোদী। পিছনের সারিতে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ (চিহ্নিত)। —ফাইল চিত্র।
আরও পড়ুন: প্রথম দফার তালিকাতে অসন্তুষ্ট কর্মীরা, ক্ষোভের মুখে জেরবার রাজ্য বিজেপি
আরও পড়ুন: ইয়েড্ডির ডায়েরিতে উঠল ঝড়, অমিত বললেন জালিয়াতিতে নেমেছে কংগ্রেস
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
একদা আডবাণীর অনুগামী অরুণ জেটলিকে আজ প্রশ্ন করা হয়, ‘‘আডবাণী কি নিজে ভোটে না দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নাকি তাঁর বিদায়ের টিকিট কাটা হল?’’ জবাবে জেটলি বলেন, ‘‘বিজেপির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা রয়েছে। যাঁরা এই দলকে তৈরি করেছেন, তাঁরাও এই ব্যবস্থার অঙ্গ। ফলে তাঁর বিদায়ের টিকিট কাটা হয়েছে, এমন কথা ঠিক নয়।’’
উমা ভারতী আজ বলেন, ‘‘আডবাণীজিকে আমি আবেদন করছি, তিনি নিজে ঘোষণা করুন যে তিনি ভোটে লড়তে চাননি। যেমন আমি ঘোষণা করেছি যে ভোটে লড়ব না।’’ কিন্তু প্রকাশ্যে তেমন ঘোষণা করেননি আডবাণী। বিজেপির বক্তব্য, জয়ই প্রার্থী করার আসল মাপকাঠি। দলের সমীক্ষায় স্পষ্ট, অমিত শাহ গাঁধীনগর থেকে ভোটে লড়লে শুধু সেই আসনটিই নয়, গোটা গুজরাতেও সদর্থক প্রভাব পড়বে। কিন্তু বিজেপিরই একটি অংশের মতে, গাঁধীনগর আসন ১৯৮৯ সাল থেকে বিজেপির গড়। সেখানে আডবাণী জিততে পারতেন না, এ ধারণা ভুল। অমিত যে বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে এসেছেন, সেটিও আডবাণীরই সংসদীয় কেন্দ্রের অধীনে।
বিতর্ক রয়েছে আরও। কংগ্রেস কালই প্রশ্ন তুলেছিল, বিজেপি এত ভেবেচিন্তে প্রার্থী বাছাই করলে ধর্ষণে অভিযুক্ত নিহালচন্দ্র, গোষ্ঠী সংঘর্ষে অভিযুক্ত সঞ্জীব বালিয়ানের নাম কী করে রইল? স্মৃতি ইরানির নামের পাশে ‘পার্সি’ লেখা আছে। অথচ বিজেপি দাবি করে, তারা জাতপাতে বিশ্বাস করে না। রাজস্থানের একমাত্র মহিলা বিজেপি সাংসদ সন্তোষ আহলাওয়াতও টিকিট পাননি। কাল প্রকাশিত দলের ১৮৪ জনের তালিকায় দু’ডজনের মতো বর্তমান সাংসদের নাম বাদ পড়েছে। টিকিট পাননি মোদী সরকারের কৃষি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কৃষ্ণা রাজও।