পাশাপাশি: দলের ইস্তাহার প্রকাশে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও পলিটবুরো সদস্য প্রকাশ কারাট। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় সরকারের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে বাড়িয়ে ২০০ দিনের করার কথা বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টা পরে দিল্লিতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও দলীয় ইস্তাহারে সেই একই কথা বললেন।
মমতা আবার পুরনো যোজনা কমিশন ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। বৃহস্পতিবার দিল্লির এ কে গোপালন ভবনে বসে সেই একই কথা বললেন ইয়েচুরি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে বিপরীত মেরুতে দুই দলকে আজ লোকসভা ভোটের ইস্তাহার এক মেরুতে নিয়ে এল। প্রথম ইউপিএ-সরকারের আমলে একশো দিনের কাজের প্রকল্প বা ‘এনরেগা’ চালু করার ক্ষেত্রে বামেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। আজ তৃণমূলের মতোই সিপিএম বলল, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাজের দিনের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিতে হবে। অন্তত ২০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা দিতে হবে। রাজ্যের ন্যূনতম মজুরির সমান মজুরি দিতে হবে। যখন কাজ দেওয়া যাচ্ছে না, তখন বেকার ভাতা দিতে হবে। শ্রমিকদের ন্যূনতন বেতন ১৮ হাজার টাকা করার কথাও বলেছে। রয়েছে বেসরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তফসিলি জাতি, জনজাতির জন্য সংরক্ষণ, ধনীদের উপর সম্পদ কর বসানো, সরকারি নজরদারি বন্ধ করা, সামাজিক প্রকল্পের জন্য আধার ও বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার বন্ধ করার কথাও। দেশদ্রোহিতা আইন ও সামরিক বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন সংশোধনের কথাও বলেছে সিপিএম।
বামেরা বরাবর রাজকোষ ঘাটতির নিয়ন্ত্রণে বাজেট দায়বদ্ধতা বা এফআরবিএম আইনের বিরোধী হলেও, পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের শেষ পর্যায়ে এই আইন চালু করা হয়েছিল। আজ ইস্তাহারে সিপিএম সেই এফআরবিএম আইন তুলে দেওয়ার কথা বলেছে। তার বদলে সামাজিক ক্ষেত্রে ন্যূনতম খরচ বেঁধে দেওয়ার দাবি তুলেছে। ইয়েচুরির যুক্তি, ‘‘বাজেটের বাইরে থেকে খরচ করা হচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকারকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রচারের জন্য সেস বসিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ইস্তাহারে ফের সিপিএম মোদী সরকারকে সরিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠনের ডাক দিলেও প্রশ্ন উঠেছে, বাংলা-সহ অনেক রাজ্যেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ে সিপিএম কি ধর্মনিরপেক্ষ ভোটেই ভাগ বসাচ্ছে না? ইয়েচুরির জবাব, ‘‘ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা ভোটেও বলা হয়েছিল, অজিত জোগী-মায়াবতীর জোট বিরোধী ভোটে ভাগ বসানোয় বিজেপির সুবিধা হবে। তা হয়নি। কেরলে বরাবরই বাম জোট ও কংগ্রেসের জোট একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ে।’’