বয়সে আমি বড়। কিন্তু সাংসদ হিসাবে আমার চেয়ে এক বছরের বড় ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাই আরও অনেকেই যেমন ডাকত, আমিও তাঁকে ভালবেসে প্রণবদা বলেই সম্বোধন করতাম। আমার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল।
আমি ১৯৭০ সালে সাংসদ হয়েছিলাম। ঠিক তার আগের বছর ১৯৬৯ সালে সাংসদ হন প্রণবদা। আমাদের মতাদর্শ আলাদা হলেও, তাঁর সঙ্গে আলাপ হওয়ার দিন থেকেই আমাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার একটি বন্ধন গড়ে ওঠে। প্রণবদা তাঁর তীক্ষ্ণ, বিশ্লেষণাত্মক মননের জন্য সকলের কাছে পরিচিত ও শ্রদ্ধেয় ছিলেন। তিনি মতাদর্শগত ভাবে আলাদা ও ভিন্ন রাজনৈতিক পটভূমির রাজনীতিকদের মধ্যে আলোচনা ও পারস্পরিক সহযোগিতায় বিশ্বাস করতেন। তাঁর চরিত্র, দীর্ঘ জনজীবনে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা তাঁকে এমন এক জন রাজনীতিবিদে পরিণত করেছিল যে, দলমত নির্বিশেষে তাঁকে অন্য রাজনীতিকরা শ্রদ্ধা করতেন।
ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আমার কাছে এক জন সতীর্থের চেয়েও বেশি ছিলেন। সেই মিত্রতার রেশ আমাদের দু’জনের পরিবারের উপরেও পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে আমরা যে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন করেছিলাম তা আমার হৃদয়ে বিশেষ স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে। কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রণবদা হাসপাতালে ছিলেন। সকলেই আশা করেছিলাম যে উনি সুস্থ হয়ে যাবেন। তাঁর মৃত্যু এ দেশের জন্য বড় ক্ষতি। আমি এক জন বন্ধু হারালাম। শর্মিষ্ঠা, অভিজিৎ ও ইন্দ্রজিৎ-সহ পরিবারের সকল সদস্যের উদ্দেশে আমার সমবেদনা রইল।
আরও পড়ুন: গত ৫০ বছরে তাঁর জীবন দেশের গত ৫০ বছরের ইতিহাস, প্রণব কন্যাকে চিঠি সনিয়ার
আরও পড়ুন: ভালবাসতেন, চোখের জলও ফেলিয়েছিলেন