ছবি: পিটিআই।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ৩টে পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে ৬০.৫২ শতাংশ ভোট পড়েছে। একই সময়ের মধ্যে ছত্তীসগঢ়ে ভোট পড়েছে ৫৫. ০৩ শতাংশ।
মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে চার জন আহত হলেন। ধারালো অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে ঝামেলা পাকানোর অভিযোগ উঠেছে দুই শিবির থেকেই।
মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা কংগ্রেস হাইকম্যান্ড ঠিক করবে বলে জানালেন ছত্তীসগঢ়ের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল। এর পাশাপাশি তাঁর দাবি, একমুখী লড়াইয়ে কংগ্রেসই ফের জিতবে। ৯০ আসনের বিধানসভায় তারা ৭৫টিরও বেশি আসনে জয়ী হবেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, দুপুর ১টা পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে ৪৫.৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ছত্তীসগঢ়ে ভোট পড়েছে ৩৮.২২ শতাংশ ভোট।
মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার দিমানি বিধানসভার ১৪৭ এবং ১৪৮ নম্বর বুথে হঠাৎই উত্তেজনা ছড়াল। ভোটকেন্দ্রের সামনে দু’পক্ষ হঠাৎই জড়ো হয়ে পাথর ছুড়তে শুরু করে। পাথরের ঘায়ে আহত হন এক ব্যক্তি। পরে পুলিশের বিশাল একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সকাল ৯টা পর্যন্ত ছত্তীসগঢ়ে ভোট পড়েছে ৫.৭১ শতাংশ। ওই একই সময়ের মধ্যে মধ্যপ্রদেশে ভোট পড়েছে ১১.৫৫ শতাংশ।
ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রদেশে ভোট দিলেন কংগ্রেসের কমল নাথ। ভোট দিলেন রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির শিবরাজ সিংহ চৌহান, বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীও।
মধ্যপ্রদেশে প্রধান দুই দল শাসক বিজেপি এবং প্রাক্তন শাসক কংগ্রেস সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। মায়াবতীয় বিএসপি লড়ছে ২৩০টিতে। আসন সমঝোতা না হওয়ায় ‘ইন্ডিয়া’র শরিক সমাজবাদী পার্টি ৮০, আম আদমি পার্টি ৬৯, জেডিইউ ৫, সিপিআই ৯টি এবং সিপিএম ৪টি আসনে আলাদা আলাদা ভাবে লড়ছে। সব মিলিয়ে ২,৫৩৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন রাজ্যের ৫ কোটি ৬০ লক্ষের বেশি ভোটদাতা।
ছত্তীসগঢ় বিধানসভায় মোট ৯০টি আসন। তার মধ্যে মাওবাদী-উপদ্রুত ২০টি আসনে গত ৭ নভেম্বর প্রথম দফা ভোট নেওয়া হয়ে গিয়েছে। বাকি ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ শুক্রবার। ভোট হবে রায়পুর, বিলাসপুর, ভিলাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে। দ্বিতীয় দফায় নির্ধারিত হবে ৯৫৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য।
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান (বুধনি), দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের পাশাপাশি রয়েছেন তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী— নরেন্দ্র সিংহ তোমর (মোরেনা), প্রহ্লাদ পটেল (নরসিংহপুর) এবং ফগ্গন সিংহ কুলস্তে। কংগ্রেসের ‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ’ কমল নাথ ছিন্দওয়াড়ায় প্রার্থী হয়েছেন। বিরোধী দলনেতা গোবিন্দ সিংহ (লহর), প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংহের ছেলে জয়বর্ধন (রাঘোগড়) এবং প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংহের ছেলে অজয় (চুরাহাট)-ও রয়েছেন প্রার্থী তালিকায়। ছত্তীসগঢ়ে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল (পাটন), উপমুখ্যমন্ত্রী ত্রিভুবনেশ্বর শরণ সিংহদেও (অম্বিকাপুর), বিধানসভার স্পিকার তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চরণদাস মহন্তের (শক্তি) ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে দেড় দশকের বিজেপি শাসনের ইতি ঘটিয়ে প্রথম বার বিধানসভা ভোটে জিতে ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। রাজ্যের ৯০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৬৮টি জিতেছিল তারা। বিজেপি মাত্র ১৫টি। কংগ্রেস ৪৩ এবং বিজেপি ৩৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় যে ৭০টি আসনে ভোট হতে চলেছে, গত বার তার মধ্যে ৫১টিতেই জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। বিজেপি ১৩, জেসিসি ৪ এবং বিএসপি ২টি আসনে জিতেছিল।
২০১৮-র ভোটের ফল বলছে, মধ্যপ্রদেশের আটটি অঞ্চলের মধ্যে বিজেপি এবং কংগ্রেস এগিয়ে ছিল চারটি করে অঞ্চলে। বাঘেলখণ্ড, ভোপাল (মধ্য ভারত), বুন্দেলখণ্ড, গির্দ (চম্বল-গোয়ালিয়র), মহাকোশল, মালওয়া, নর্মদাপুরম, এবং বিন্ধ্য (নিমার)— এই আট ভাগে ভাগ করা হয় মধ্যপ্রদেশকে। তার মধ্যে বাঘেলখণ্ড, ভোপাল (মধ্য ভারত), বুন্দেলখণ্ড এবং নর্মদাপুরমে এগিয়ে ছিল বিজেপি। বাকিগুলিতে কংগ্রেস।