(বাঁ দিকে) চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নবীন পট্টনায়ক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
১৯৯৭-তে ভারতের রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র, জনতা দলের নেতা বিজু পট্টনায়ক মারা যাওয়ার পরে শূন্য আকসা লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন পুত্র নবীন। ২০০০ সালে জনতা দল ভেঙে বাবার নামে ওড়িশায় নবীন পত্তন করলেন আঞ্চলিক দল বিজু জনতা দল (বিজেডি)। সে বছরেই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকে পরাজিত করে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী হলেন। টানা পাঁচ বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন নবীন। তবে, এ বার বিজেপির কাছে ধাক্কা খেল বিজেডি। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলে স্পষ্ট ইঙ্গিত, ওড়িশায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি।
পাঁচ বছর পর আবারও অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্সিতে ফেরা নিশ্চিত করলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তাঁর দল টিডিপির ধাক্কায় ধরাশায়ী অবস্থা জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআরসিপি-র। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চন্দ্রবাবুর দলকে ফেলে সরকার গড়েছিলেন জগন্মোহন মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যেই অন্ধ্রের মানুষ আবার সরকার বদলে ফেলল।
জয় প্রায় নিশ্চিত হতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। অন্ধ্রপ্রদেশে বিজেপি, চন্দ্রবাবুর দলের সঙ্গে জোট করে লড়ছে। সেই জোটে রয়েছে জেএনপিও। লোকসভায় বিজেপি নেতৃত্ব জোট এনডিএ এগিয়ে থাকার নিরিখে জাদুসংখ্যা পেরিয়ে যেতেই মোদী, শাহকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানালেন চন্দ্রবাবু। পাল্টা চন্দ্রবাবুকেও শুভেচ্ছা জানালেন মোদী-শাহ।
সূত্রের খবর, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি মঙ্গলবার বিকেলেই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবন যাচ্ছেন। রাজ্যপালের হাতে আজই নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেবেন তিনি।
অন্ধ্রপ্রদেশের মসনদে আবারও ফিরতে চলেছেন চন্দ্রবাবু নাইডুর দল। বিকেল ৪টে পর্যন্ত যা ফলাফল, তাতে দেখা যাচ্ছে টিডিপি একাই এগিয়ে রয়েছে ১৩২ আসনে। এ ছাড়াও ওই রাজ্যে টিডিপির সঙ্গী বিজেপি সাতটি এবং জেএনপি ২০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ৯ জুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে পারেন চন্দ্রবাবু।
১৪৭ বিধানসভা আসনের ওড়িশায় সরকার গড়তে প্রয়োজন ৭৪টি আসন। দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত কমিশনে হিসাব অনুযায়ী এগিয়ে থাকার নিরিখে সেই জাদুসংখ্যা পেরিয়ে গেল বিজেপি। এখনও পর্যন্ত তারা ৭৫টি আসনে এগিয়ে। নবীনের দল বিজেডি এগিয়ে ৫৪টি আসনে। কংগ্রেস ১৬টি, সিপিএম ১টি এবং অন্যান্য ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রি বিধানসভা আসনে জয় পেল টিডিপি। এই কেন্দ্রে চন্দ্রবাবু প্রার্থী করেছিলেন বর্ষীয়ান নেতা জি বুচৌয়াকে। তাঁর প্রাপ্ত মোট ভোট ১ লাখ ২৯ হাজার। বুচৌয়া ওই আসনে জয় পেলেন ৬৪ হাজারের বেশি ভোটে।
কমিশন সূত্রে খবর, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডি প্রধান নবীন একটি আসনেই এগিয়ে রয়েছেন। হিঞ্জিলি বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি এগিয়ে রয়েছেন ২,১৫৭ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তবে কাঁটাবাঞ্জি বিধানসভা কেন্দ্রে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন নবীন।
কমিশন সূত্রে খবর, জনসেনা পার্টি (জেএনপি) ছাপিয়ে গেল জগনের দলকে। ২০টি আসনে এগিয়ে জেএনপি। সেখানে ওয়াইএসআরসিপি এগিয়ে রয়েছে ১৮টি আসনে।
অন্ধ্রপ্রদেশে আরও এগোল চন্দ্রবাবুর দল টিডিপি। ১৭৩টি আসনের মধ্যে ১২৬টি আসনেই এগিয়ে থাকল তারা। সেখানে জগনের দল এখনও পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে মাত্র ২২টি আসনে। অন্য দিকে, টিডিপি ছাড়া এনডিএ জোটে রয়েছে বিজেপি এবং জেএনপি । বিজেপি এগিয়ে ৭টি এবং জেএনপি ২২টি আসনে এগিয়ে।
কমিশন সূত্রে খূবর, কয়েক রাউন্ড ভোটগণনার পর ওড়িশায় ৪৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেডি। সেখানে বিজেপি ৭২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস ১৩টি আসনে এবং সিপিএম ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
ওড়িশায় বিজেডি পিছিয়ে থাকলেও দলের প্রধান তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন।
প্রাথমিক প্রবণতা অনুযায়ী, ওড়িশায় অনেকটাই এগিয়ে বিজেপি। বিজেপি এগিয়ে ৪৩টি আসনে। সেখানে বিজেডি ২৪টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস এগিয়ে পাঁচটি আসনে। সিপিএম একটি, অন্যান্য একটি আসনে এগিয়ে।
অন্য দিকে, অন্ধ্রপ্রদেশেও টিডিপি-বিজেপি-জনসেনা জোট অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে শাসকদলের থেকে। টিডিপি ৯৮ আসনে এগিয়ে। জগনের দল এগিয়ে রয়েছে মাত্র ১৯টি আসনে । জননেতা পার্টি ১৪টি আসনে এবং বিজেপি ৩টি আসনে।
১ ঘণ্টা হল ভোটগণনা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক প্রবণতায় অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশে ১৩৫টি আসনেই এগিয়ে রয়েছে টিডিপি-বিজেপি-জনসেনা জোট। সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে জগনের দল।
প্রাথমিক ট্রেন্ড অনুযায়ী, ওড়িশায় ১২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে নবীনের দল বিজেডি। বিজেপি এগিয়ে ৫টি আসনে।
চলছে পোস্টাল ব্যালটের গণনা। প্রাথমিক ট্রেন্ড অনুযায়ী, কুপ্পম বিধানসভা কেন্দ্রের টিডিপি প্রার্থী চন্দ্রবাবু এগিয়ে রয়েছেন। ১,৫৪৯ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও, টিডিপির দুই প্রার্থী পি নারায়ণা এবং জি বুচৌয়াও এগিয়ে রয়েছেন পোস্টাল ব্যালটের গণনায়।
আড়াই দশকের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেডির প্রতিষ্ঠাতা-প্রধান নবীন পট্টনায়কের ‘অসুস্থতা’, ভোটের আগে থেকেই চর্চায় ছিল। তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছেই। এই আবহে নবীন সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি বার বার বলেছি, আমার উত্তরসূরি রাজ্যের জনগণই নির্ধারণ করবে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তেমনটাই হওয়া উচিত। তবে এখনই নেতৃত্ব বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই।’’
প্রথমেই পোস্টাল ব্যালটে ভোটগণনা হবে। তার পর শুরু হবে ইভিএম-বন্দি ভোটের গণনা।
ঘড়ির কাঁটায় ঠিক সকাল ৮টা। শুরু হল ভোটগণনা। প্রতিটি ভোটগণনা কেন্দ্রে বাইরে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ।
ভোটগণনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি সৃষ্টি না হয় তাই প্রতিটি গণনা কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি থাকছে রাজ্য পুলিশও। ছ’হাজারের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায়। যেখানে যেখানে অশান্তি ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই সব জায়গায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলছে মাইকিং এবং রুটমার্চ। পাশাপাশি ওড়িশাতেও একই ভাবে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করেছে।