নিজস্ব চিত্র
নভেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রকল্প চালাবে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের মানুষের খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। চলবে গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা। টিকা নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করেছিল, সেটা কার্যকর হয়নি। ভারত সফল ভাবে টিকাকরণ চালাচ্ছে।
এর মধ্যেও অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, কেন রাজ্য সরকারগুলিকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বলা হয়েছে, সংবিধানে স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যের বিষয়। সেই কারণে রাজ্যগুলিকে নির্দিষ্ট নিয়ম উল্লেখ করে নির্দেশ পাঠায় কেন্দ্র। এই বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার টিকাকরণ প্রক্রিয়া চালিয়েছে। রাজ্যগুলি জানিয়েছে, এই প্রক্রিয়া রাজ্যের উপর ছে়ড়ে দেওয়া হোক। নানারকম প্রশ্ন ওঠে। কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি হয়, সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে একটা প্রচার চলে। রাজ্য সরকার যদি নিজের মতো কাজ করতে চায়, তা হলে কেন্দ্রীয় সরকার কেন এত দায়িত্বে নেবে। সেই কারণেই রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১ মে থেকে ২৫ শতাংশ কাজ রাজ্যের কাছে যায়। কাজ সম্পূর্ণ করতে চেষ্টাও করে রাজ্য। এত বড় কাজে কত সমস্যা আসতে পারে, রাজ্যগুলি বুঝতে পারে। ২১ জুন থেকে ১৮ ঊর্ধ্বদের জন্য রাজ্যগুলিকে বিনামূল্যে টিকা দেবে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকে টিকা কিনে দেবে কেন্দ্র। বেসরকারি হাসপাতালগুলি টিকা পিছু ১৫০ টাকা পরিষেবা কর নিতে পারবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে টিকাকরণ করছে ভারত। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশে টিকাকরণ এখনও শুরুই হয়নি। ভারতে করোনা থেকে যাঁদের ঝুঁকি বেশি, তাঁদের আগে টিকা দেওয়া হয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে যদি প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের যদি টিকা না দেওয়া হত, তাহলে কী হত, একবার ভেবে দেখুন। বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণ করা হয়েছে বলেই তাঁরা নিশ্চিন্তে সেবার কাজ করে চলেছেন।
দেশে ২৩ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে, আমি যখন কথা বলছি, তখন এই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা কম সময়ের মধ্যে অনেকটা লক্ষ্য পূর্ণ করেছি। গতবছর এপ্রিলে আমরা টিকা টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছি। আরও দ্রুত টিকার সরবরাহ বাড়বে। দেশে ৭টি সংস্থা টিকা তৈরি করছে। ৩টি সংস্থা আলাদা আলাদা টিকার ট্রায়াল চালাচ্ছে। অন্য দেশ থেকেও টিকা কেনার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্যও দুটি টিকার ট্রায়াল চলছে। এই কম সময়ের মধ্যে টিকা তৈরি করা, মানবতার জন্য অনেক বড় পাওয়া। টিকা তৈরির পরেই দেশের খুব কম দেশে টিকা পৌঁছেছে।
মনে রাখবেন করোনা টিকা সুরক্ষা কবচ। আগের থেকে টিকাকরণের যে গতি ছিল কম। আমরা গতি বাড়াতে মিশন ইন্দ্রধনুষ চালু করেছি। এর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকা দেওয়া হবে। সবাইকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। টিকাকরণের শতাংশ এখন ৯০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। এই সরকার টিকাকরণের গতি বাড়িয়েছে। আমরা ভারতের টিকাকরণের অভিযানে নতুন টিকা যুক্ত করেছি। আমরা শিশুদের, দরিদ্র মানুষদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। আমরা ১০০ শতাংশ টিকাকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, তখনই করোনা আসে। প্রশ্ন ওঠে, ভারত কি এই লড়াই লড়তে পারবে। কিন্তু লক্ষ্য স্থির থাকলে, ফল পাওয়া যায়। ভারত সব আশঙ্কাকে দূর করে দেশে টিকা তৈরি করে দেখিয়েছে।
করোনার বিরুদ্ধে সারা দেশ কঠিন লড়াই লড়ছে। ভারত দীর্ঘসময় লড়াই করে চলেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। টিকার চাহিদার থেকে উৎপাদনকারী সংস্থার সংখ্যা কম। দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের চাহিদা অত্যাধিক পরিমাণে বেড়ে গিয়েছিল। গত ৫০ বছরের ইতিহাস দেখবেন, বিদেশ থেকে ওষুধ, টিকা আনতে অনেক সময় লেগে যেত, টিকাকরণ শুরুও করা যেত না দীর্ঘদিন। পোলিও-সহ একাধিক টিকার জন্য দশকের পর দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে।