জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের সামনে মহিলাদের জমায়েত। ছবি: পিটিআই
শাহিন বাগ নিয়ে সরকারের মাথাব্যথা ছিলই। শনিবার রাত থেকে তার সঙ্গে যোগ হল জাফরাবাদ। রাজধানীর রাজপথে ফের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করলেন মহিলারা। এই আন্দোলনের জেরেও আটকে পড়েছে দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিবাদীদের বুঝিয়ে রাস্তা খোলার চেষ্টা হলেও কোনও ফল হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশন। আধাসেনা মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি একটি মামলায় রায় দিয়েছে, সরকারি চাকরি ও পদোন্নতিতে তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের সংরক্ষণ দিতে বাধ্য নয় সরকার। সেই রায়ের প্রতিবাদে আজ রবিবার দেশ জুড়ে প্রতিবাদ-আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। সেই আন্দোলনকেও সমর্থন করেছেন এই মহিলারা। ফলে আজ আন্দোলন আরও জোরদার হওয়ার আশঙ্কা।
সিএএ-র প্রতিবাদে এবং এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার রাত থেকে জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন দু’শোরও বেশি মহিলা প্রতিবাদকারী। তাঁদের অধিকাংশের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। সঙ্গে চলেছে ‘আজাদি’র স্লোগান। খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন পদস্থ পুলিশ কর্তারা। প্রতিবাদী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু অবস্থানে অনড় মহিলারা। তাঁদের দাবি, ‘‘সিএএ-এনআরসি থেকে মুক্তি চাই।’’
আরও পড়ুন: একটা রাস্তা খুলে দিল শাহিন বাগই
রবিবার সকালে ফের দিল্লি পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। পদস্থ পুলিশকর্তা বেদ প্রকাশ সূর্য বলেন, “আমরা প্রতিবাদীদের সঙ্গে কথা বলছি, যাতে তাঁরা আন্দোলন তুলে নিয়ে এলাকা ছেড়ে দেন। এ ভাবে মূল রাস্তা আটকে প্রতিবাদ করা যায় না। আধাসেনাকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: মোদীর প্রশংসায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, বিতর্ক তুঙ্গে
সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদে প্রায় ৭০ দিন ধরে শাহিন বাগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন মহিলারা। এই আন্দোলন নিয়ে একটি মামলায় কয়েক দিন আগেই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, প্রতিবাদ করা মৌলিক অধিকার, কিন্তু রাস্তা আটকে প্রতিবাদ করা যায় না। বিচারপতিরা বলেছিলেন, ‘‘সবাই যদি এ ভাবে রাস্তায় বসে পড়েন তা হলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন।’’ শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে অন্য কোনও জায়গায় আন্দোলন সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুই আইনজীবীকে মধ্যস্থতাকারীকেও নিয়োগ করে দেয় শীর্ষ আদালত। তাঁরা শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার রাতে অবশ্য একটি রাস্তা ব্যবহারের জন্য খুলে দিয়েছেন আল্দোলনকারীরা। তার মধ্যে প্রায় একই ভাবে রাস্তা আটকে জাফরাবাদেও আন্দোলন শুরু হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশ-প্রশাসন মহলে।