Sachin Pilot

সচিনের দাবি মেনে আপাতত দ্বন্দ্ব সামাল

গহলৌত বনাম পাইলট বিবাদে শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তা হল, গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ হারানো পাইলট কি নিজের পদ ফিরে পাবেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৩ ০৭:৩০
Share:

সচিন পাইলট। —ফাইল চিত্র।

আগে একজোট হয়ে ভোটে লড়তে হবে— জিতলে ঠিক হবে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

Advertisement

অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটের বিবাদ মেটাতে কর্নাটকের মতোই রাজস্থানেও ভোটের আগে কংগ্রেস হাইকমান্ড ভারসাম্যের নীতি নিল।

রাহুল গান্ধীর নির্দেশে, পাইলটের দাবি মেনে গহলৌত বিজেপির বসুন্ধরা রাজে সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিলেন। অন্য দিকে, গহলৌতের সরকার গরিব, অনগ্রসর শ্রেণির জন্য যে সব কাজ করেছে, পাইলট তার প্রশংসা করলেন। রাজস্থানের ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে আগামিকাল থেকেই কংগ্রেস গহলৌত সরকারের জনমুখী প্রকল্প নিয়ে প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিল।

Advertisement

গহলৌত বনাম পাইলট বিবাদে শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তা হল, গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ হারানো পাইলট কি নিজের পদ ফিরে পাবেন? কংগ্রেস সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সংগঠনে পাইলটকে আরও বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে। তিনি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে থাকবেন। এআইসিসি-তেও গুরুদায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। পাইলট অবশ্য রাজ্যের সংগঠনে এবং রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট বণ্টনের ক্ষমতা পেতে অনেক বেশি আগ্রহী। এ বিষয়ে এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি। গহলৌত বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকলেও এআইসিসি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল আজ জানিয়েছেন, কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছাড়াই কংগ্রেস রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনে নামবে। সূত্রের খবর, মরু রাজ্যে জিতলে পরে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রিত্বের ব্যাপারে কর্নাটকের মতোই নীতি নিয়ে আপাতত এগোতে চাইছে কংগ্রেস।

চলতি বছরের শেষে রাজস্থান বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি এবং বিশেষ করে দুই নেতার বিবাদ মেটাতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও রাহুল রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে চার ঘণ্টা টানা বৈঠক করেন। পায়ে চোট পাওয়ায় গহলৌত দিল্লি না এলেও জয়পুর থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেন। গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাসে পাইলট তিনটি বিষয়ে সরব ছিলেন— এক, বসুন্ধরা রাজে সরকারের দুর্নীতির তদন্ত শুরু করতে হবে। দুই, সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যদের নিয়োগের মাপকাঠি তৈরি করতে হবে। তিন, চাকরি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। তরুণ প্রজন্মের ভোটের কথা মাথায় রেখে গহলৌত শেষের দু’টি দাবি আগেই মেনে নিয়েছিলেন।

পাইলটের প্রথম দাবিতে সিলমোহর দিয়ে রাহুল আজ বলেন, কংগ্রেসকে বিজেপি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করতে হবে। তার পরেই ঠিক হয়, গহলৌত সরকার শীঘ্র এ বিষয়ে পদক্ষেপ করবে। বৈঠকের পরে উৎফুল্ল পাইলট বলেন, ‘‘কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব আমার দাবিদাওয়াকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, আমি খুশি।’’ সংগঠনে তাঁর দায়িত্ব নিয়ে পাইলট বলেন, দল যে দায়িত্ব দেবে, তিনি পালন করবেন।

রাজস্থানে অবশ্য গত ২৫ বছর ধরে এক বার কংগ্রেস, এক বার বিজেপি ক্ষমতায় আসছে। আজকের বৈঠকের পরে কংগ্রেসের সব নেতাই বলেছেন, দলের সকল নেতা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়লে কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে তার প্রভাব ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও পড়বে বলে পাইলটের যুক্তি।

গহলৌত সরকারের কাজের প্রশংসা করলেও বৈঠকে রাহুল বলেছেন, আমলাতন্ত্রই ছড়ি ঘোরাচ্ছে। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। তাঁদের গুরুত্ব দিতে হবে। দলিত, আদিবাসী, ওবিসি, সংখ্যালঘুরা কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক। সরকারে ও ক্ষমতায় তাঁরা যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছেন না। খড়্গে গহলৌতকে বলেন, রাজস্থানে দলিতদের উপরে বার বার নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। এ বিষয়ে গহলৌতকে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়ে খড়্গে কবীরের দোঁহা আউড়ে বলেন, ‘‘কাল করে সো আজ কর, আজ করে সো অব, পল মে প্রলয় হোয়েগি, বাহুরি করেগা কব!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement