বিহারের বাম নেতা ত্রিভুবন শর্মা।জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর।—নিজস্ব চিত্র।
আইন অকেজো হয়ে গিয়েছে ২৪ বছর আগে। অথচ সেই আইনে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তার পরেও ১৬ বছর জেলে খেটে শেষমেশ মুক্তি পেলেন বিহারের বাম নেতা ত্রিভুবন শর্মা! তাঁর সতীর্থ ৭ জন এখনও জেলে বন্দি।
ঘটনা বিহারের জহানাবাদ-অরওয়ালের। জোতদারদের সঙ্গে ভূমিহীন কৃষকদের সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল পঞ্চায়েত প্রধান এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের নেতা শাহ চাঁদ ও তাঁর সঙ্গীদের। আশির দশকের সে ঘটনায় অভিযুক্ত বাম নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছিল সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতবাদী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (টাডা)। মোট ১৪ জনের কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়েছিল টাডা-তেই। কিন্তু সেই আইন প্রত্যাহার হয়ে যাওয়ার পরেও কেন দলের নেতা-কর্মীরা টাডায় সাজা খাটবেন, সেই প্রশ্ন তুলে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে লিবারেশন। দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে মুক্তি পেয়েছেন জহানাবাদ জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য ত্রিভুবন। বাকিদেরও মুক্তির দাবি উঠেছে।
জেলে থাকতে থাকতেই মৃত্যু হয়েছে চাঁদ-সহ ৫ জনের। ত্রিভুবন মুক্তি পাওয়ার পরেও গয়ায় আরও ৫ এবং ভাগলপুরে দু’জন জেলবন্দি। গয়া সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে শুক্রবার ত্রিভুবনকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন লিবারেশনের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। জহানাবাদ ফেরার পথে মখদুমপুর, গোডিহা-সহ কিছু জায়গায় স্থানীয় মানুষ সংবর্ধনা দেন মুক্তিপ্রাপ্ত নেতাকে। দলের রাজ্য সম্পাদক কুণালের দাবি, ‘‘কিসান-মজদুরদের পক্ষে লড়াই করতে যাওয়ায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল আমাদের নেতাদের। টানা ১২ বছর কারাবাসে থেকে মৃত্যুর পরে শাহ চাঁদের শেষযাত্রায় এলাকার মানুষের ভিড় ভেঙে পড়েছিল। টাডা প্রয়োগের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তই ভুল ছিল বলে আমরা মনে করি। সেই আইন উঠে যাওয়ার পরেও সাজা ভুগে চলা তো আরও প্রহসন ও বেদনার!’’