বিধানসভায় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ। ছবি পিটিআই।
মোদী সরকারের কৃষি আইন নাকচ করে পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকার নিজস্ব বিল পাশ করিয়েছে। রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ের মতো অন্যান্য কংগ্রেসশাসিত রাজ্যও একই রকম বিল পাশ করানোর কথা ভাবছে। কিন্তু পঞ্জাব বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে রাষ্ট্রপতি সই করবেন, না কি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হবে, তা নিয়ে এখন জল্পনা তুঙ্গে।
তারই মধ্যে আজ বিহার ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করে কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘোষণা করল, বিহারে কংগ্রেসের জোট ক্ষমতায় এলে পঞ্জাবের মতোই বিহার বিধানসভাতেও মোদী সরকারের কৃষি আইন নাকচ করে দিয়ে বিল পাশ করানো হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধিতার স্বার্থে রাজ্যগুলি যদি এ ভাবে কেন্দ্রের আইন নাকচ করতে থাকে, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় অচলাবস্থা তৈরি হবে। সেটা হতে দেওয়া যায় না। আজ কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর বলেন, ‘‘গণতন্ত্রে বিধানসভারও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা কৃষকদের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার সঙ্গে আর কোনও কিছুর তুলনা চলে না। পঞ্জাব বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এলে তা খুঁটিয়ে দেখা হবে। তার পরে কৃষকদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত হবে।’’
আরও পড়ুন: ‘বফর্সে অন্তর্ঘাত’, দাবি প্রাক্তন সিবিআই কর্তার
আইনজীবীদের বক্তব্য, পঞ্জাব সংবিধানের ২৫৪(২) অনুচ্ছেদকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তিন কৃষি আইনকে নাকচ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে রাজ্যকে কেন্দ্রীয় আইন না মানার কিছু সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে তাতে কিছু শর্তও রয়েছে। যেমন, সংবিধানের এই ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিল পাশ হলে তাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতেই হবে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বলেছেন, ‘‘রাজ্য এ ভাবে কেন্দ্রীয় আইন নাকচ করতে পারে না। ক্যাপ্টেন (অমরেন্দ্র সিংহ, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী) নাটক করছেন!’’
উল্টো দিকে কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, রাষ্ট্রপতি অনুমোদন না দিলে আইনি সংঘাত হবে। কারণ সংবিধান অনুযায়ী, কৃষি রাজ্যের বিধানসভার এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। কেন্দ্র আইন করে কৃষি ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে আইনে তার জবাবদিহি করতে হবে। কংগ্রেসের আর এক আইনজীবী নেতা পি চিদম্বরম বলেন, ‘‘মোদী সরকার কৃষি পণ্য বিপণনের এক রকম মডেল গ্রহণ করেছে। পঞ্জাব সরকার আর এক রকম। ভারতের মতো বিরাট দেশে কেন দু’রকম মডেল থাকতে পারে না?’’
আরও পড়ুন: কোয়াড-এর পাল্টা জোট গড়ছে চিন
তাঁর যুক্তি, ‘‘সংবিধানের ২৫৪ অনুচ্ছেদে প্রতিটি রাজ্যকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মানুষকে ঠিক করতে দেওয়া হোক, তাঁরা কী চান। রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি নন।’’