ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে অবশেষে জোট হল বাম কংগ্রেসের, কৌশলী সঙ্গী তিপ্রা মথা। ছবি: সংগৃহীত।
অবশেষে জট খুলল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাম ও কংগ্রেস— দু’পক্ষই জানিয়ে দিল ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে তারা জোট করেই লড়বে। তবে ওই জোটে সরাসরি শামিল না হলেও কৌশলগত ভাবে থাকছে তিপ্রা মথা।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে থেকেই বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে জোটের উদ্যোগ শুরু হয়। সেই আলোচনার মধ্যেই ভেস্তে যেতে বসেছিল জোট প্রক্রিয়া। কিন্তু শেষ মুহূর্তের আলোচনায় জোটের জট খুলে যায়। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তারা অতিরিক্ত ৩টি আসনে ও বামফ্রন্ট অতিরিক্ত ১৩টি আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে রাজ্যবাসীকে বিজেপির অপশাসন থেকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নিল। কংগ্রেসের ওই বিবৃতির পরেই স্পষ্ট হয়ে যায়, বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট করেই লড়বে। বুধবার রাতে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর তরফে দেওয়া বিবৃতিও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিল। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, কংগ্রেসকে যে ১৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল, সেই আসনগুলি থেকে সিপিএম প্রার্থী প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ছিল ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন। জোট শর্ত মেনে কংগ্রেস ও বামপ্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখন বামফ্রন্ট ৪৫টি, একটি বাম সমর্থিত নির্দল ও ১৩টি আসনে কংগ্রেস লড়াই করছে।
অন্য দিকে, ওই জোটে কৌশলগত ভাবে শামিল হয়েছে তিপ্রা মথাও। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন চৌধুরী প্রার্থী হয়েছেন সাবরুম কেন্দ্র থেকে। বৃহস্পতিবার ওই আসন থেকে নিজেদের প্রার্থী সরিয়ে নিয়েছে তিপ্রা মথা। মোট ৪৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। তবে সূত্রের খবর, ২৪ থেকে ২৬টি আসনেই তারা জোর দিতে চায়। বাকি আসনে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীদের ঘুরপথে সমর্থন করবে রাজা প্রদ্যোৎমাণিক্যের দল। কারণ, ত্রিপুরার রাজনীতিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) সমর্থক তিপ্রা মথা। আর নীতিগত ভাবে সেই আইনের বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে হাত ধরাধরি করলে দু’পক্ষেরই ভোট বাক্সে তার প্রভাব পড়তে পারে। তা ছাড়া স্থানীয় রাজনীতিতে বহু বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট ও তিপ্রা মথার। তাই সরাসরি জোট না করে কৌশলগত ভাবে শাসক বিজেপি ও আইপিএফটি জোটকে হারাতে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিৎ সিংহ জানান, এখন ১৩ আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী রয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে ৪টিতে। বামেরা ১৩টি আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে। তবে তিপ্রা মথা কিছু আসনে প্রার্থী তুলে নিলেও বেশ কিছু আসনে প্রার্থী রয়ে গিয়েছে। বীরজিতের কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। পরবর্তী সময়ে আলোচনার ভিত্তিতে কোনও কোনও প্রার্থী লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন।’’