ফাইল চিত্র।
বাংলার পথেই হাঁটল ত্রিপুরার সিপিএম। বেশির ভাগ নতুন মুখ সামনে রেখেই এ বার বিধানসভা নির্বাচনের ময়দানে নামছে তারা। কংগ্রেসের জন্য ১৩টি আসন ছেড়ে রেখে ৪৬টি আসনের জন্য বুধবার রাতে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল ত্রিপুরা রাজ্য বামফ্রন্ট। মোট ৬০ আসনের বিধানসভায় একটি আসনে মানবাধিকার সংগঠনের তরফে দেওয়া নির্দল প্রার্থীকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেও কংগ্রেস এবং তিপ্রা মথা-র সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, তারা অবশ্য ১৩টি আসনে সন্তুষ্ট নয়। আরও কয়েকটি আসন দাবি করছে তারা। এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক অজয় কুমার ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ এ দিনই ধর্মনগর আসনটির জন্য সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ওই আসন তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্রের কথায়, ‘‘কংগ্রেস নেতারা অনুরোধ জানিয়েছিলেন। রাজ্যের কথা চিন্তা করেই তাঁদের ইচ্ছাকে সম্মান জানানো হয়েছে।’’ দিল্লিতে এআইসিসি-র কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটিতে সম্মতির পরে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কথা।
প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি চালাচ্ছে শাসক বিজেপিও। আগরতলার একটি হোটেলে এ দিন প্রদেশ বিজেপির নির্বাচনী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা, বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব দেব, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কো-অর্ডিনেটর সম্বিত পাত্র, রাজ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মহেন্দ্র সিংহ, মহেশ শর্মা, নির্বাচনী সহ-পর্যবেক্ষক সমীর ওরাওঁ প্রমুখ। বৈঠকের পরে রাজ্য সভাপতি রাজীব জানান, প্রার্থী ঠিক করা নিয়েই তাঁদের আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিক তালিকা নিয়ে চার্টার্ড বিমানে বিজেপি নেতারা দিল্লি গিয়েছেন। বিজেপির সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা কাল, শুক্রবার। সেখানেই ত্রিপুরা, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হতে পারে।
ত্রিপুরায় পাঁচ বছর আগে বামেদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভোটে সিপিএমের ১৬ জন বিধায়ক জয়ী হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৮ জনই এ বার আর প্রার্থী নন। সরে দাঁড়ালেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী, ভানুলাল সাহা, শহিদ চৌধুরী, তপন চক্রবর্তীর মতো পরিচিত নেতারা। মানিকবাবুর ধনপুর কেন্দ্রে এ বার সিপিএমের প্রার্থী কৌশিক চন্দ। বাদলবাবুর ঋষ্যমুখ কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অশোক মিত্র। দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র প্রার্থী সাব্রুম থেকে। সিপিএম যে ৪৩টি আসনে লড়ছে, তার মধ্যে ২৩টিতেই নতুন প্রার্থী। মহিলা দু’জন। তিন শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য আছে একটি করে আসন। সিপিআই প্রার্থীও নতুন।
তিপ্রা মথা-র নেতা প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য এ দিনই জানিয়েছেন, ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডে’র বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের লিখিত আশ্বাসের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন। তার পরে আসন সমঝোতার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। সিপিএমের জিতেন্দ্র অবশ্য বলেছেন, ‘‘নির্বাচনের আচরণবিধি কার্যকর হয়ে গিয়েছে। ফলে, এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার কোনও লিখিত আশ্বাস দিতে পারবে না। তবে মথা-র জন্য সমঝোতা করতে আমাদের আপত্তি নেই।’’