ফাইল চিত্র।
এক পক্ষের দুই। অন্য পক্ষের এক। রাজ্য জুড়ে যাত্রা করে বিধানসভা ভোটের আগে পালে হাওয়া তুলতে চাইছে কেরলের শাসক বাম ও বিরোধী কংগ্রেস। তবে বাংলায় যেখানে ভোটের আগে একমঞ্চে আসার লাগাতার প্রয়াস জারি, কেরলের ‘বাস্তবতা’ মেনে সে রাজ্যে দু’পক্ষেরই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন মঞ্চ এড়িয়ে যেতে!
কেরলে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট এলডিএফের উদ্যোগে জোড়া যাত্রা শুরু হচ্ছে আগামী ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি। একেবারে উত্তরের জেলা কাসারগোড় থেকে যাত্রা শুরু হবে ১৩ তারিখ, পর দিন অন্য আর একটি যাত্রা রওনা হবে মধ্য কেরলের এর্নাকুলাম জেলা থেকে। দক্ষিণ দিকে এগিয়ে প্রথম যাত্রাটি ত্রিশূরে এবং দ্বিতীয়টি তিরুঅনন্তপুরমে একই সঙ্গে শেষ হবে ২৬ তারিখ। রাজ্যের মোট ১৪০টি বিধানসভার প্রায় সবক’টিকেই ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে এই জোড়া যাত্রায়। যার দায়িত্বে থাকছেন এলডিএফের আহ্বায়ক এবং কেরল সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক এ বিজয়রাঘবন।
একই ভাবে জনসংযোগের লক্ষ্যে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ শুরু করছে ‘ঐশ্বর্য কেরল যাত্রা’। এই কর্মসূচির দায়িত্বে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিতালা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য উম্মেন চান্ডিও কিছু এলাকায় ওই যাত্রায় শামিল হতে পারেন। গত কয়েক মাসে ইউডিএফ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে একাধিক শরিক। ফ্রন্টের মধ্যে তাই আসন ভাগ সংক্রান্ত দাবি এ বার অন্য রকম। এআইসিসি-র পরামর্শে আসন ভাগের আলোচনাও যাত্রা-পথে সেরে নেওয়ার অভিনব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, দুই শিবিরেরই ভোটের আগে এই যাত্রা কর্মসূচি হবে রাজ্য নেতাদের নিয়ে। যাত্রা-অন্তে সমাবেশে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বা কংগ্রেসের রাহুল গাঁধীর থাকার কোনও ইঙ্গিত এখনও নেই। বাংলা ও কেরলে সম্পূর্ণ আলাদা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নতুন কথা নয়। কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি একটু অন্য রকম। স্বয়ং রাহুল এখন কেরলের ওয়েনাড় থেকে সাংসদ। ফলে, কেরলের কংগ্রেস নেতারা বারেবারেই চাইছেন রাহুল এসে তাঁদের বাম-বিরোধী সুরে যোগ দিন। কয়েক দিন আগে কেরলে গিয়ে রাহুল চেন্নিতালাদের অনুরোধ মেনেই কংগ্রেস কর্মীদের উৎসাহ দিতে বামেদের বিরুদ্ধে কয়েকটি কথা বলে এসেছেন। অন্য দিকে আবার বাংলায় জোটের স্বার্থে রাহুলদেরই ব্রিগেড সমাবেশে হাজির করতে চাইছেন ইয়েচুরিরা। এই রকম পরিস্থিতিতে কেরলে যাত্রার কর্মসূচি থেকে পরস্পরের মুখোমুখি হতে চাইছেন না দু’দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিজয়রাঘবন অবশ্য বলছেন, ‘‘কেরলে কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশল ক্রমশই সাম্প্রদায়িক সুরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তবে এ বারের যাত্রায় আামাদের মূল বক্তব্য থাকবে করোনা, লকডাউন-সহ কঠিন পরিস্থিতিতে বাম সরকারের কাজ এবং কেন তাদের আবার সরকারে ফেরানো উচিত, তার উপরে।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রনের বক্তব্য, তাঁদের ‘ঐশ্বর্য কেরল যাত্রা’য় সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের বিভিন্ন কেলেঙ্কারির দিকে মানুষের দৃষ্টি আকষর্ণের চেষ্টা হবে।