সমাজমাধ্যমে শিক্ষকের পোস্টের জের, গেল চাকরি। ফাইল ছবি।
নবরাত্রির উৎসবে মহিলাদের কেন অংশ নেওয়া উচিত নয়, এই প্রশ্ন তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে চাকরি গেল বারাণসীর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই তার ঢোকা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল। তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মিথিলেশকুমার গৌতম সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘ভারতীয় মহিলাদের নবরাত্রির ন’দিন উপোস না করে ভারতের সংবিধান এবং হিন্দু কোড বিল পড়া উচিত।’ এই পোস্টের পরই হইচই পড়ে যায় বারাণসীর মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠে। চাকরি যায় মিথিলেশের। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ মিথিলেশের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের একটি অংশের দাবি, মিথিলেশ যা বলেছেন তার প্রতিটি কথা সত্যি। আর অন্য একটি অংশ বলছে, মিথিলেশ যে হেতু এক জন দলিত, তাই তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে।
যদিও তা মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুনীতা পাণ্ডে বলেন, ‘‘মিথিলেশ যা বলেছেন তা অত্যন্ত আপত্তিকর। কোনও মানুষেরই অধিকার নেই মহিলাদের সম্পর্কে এমন কথা বলার। এক জন শিক্ষকের সর্বদা এই সমস্ত বিতর্কিত কথা থেকে দূরে থাকা উচিত।’’
মিথিলেশ সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘মহিলাদের জন্য ন’দিন ধরে উপোস করার পরিবর্তে ভারতের সংবিধান এবং হিন্দু কোড বিল পড়া বেশি প্রয়োজন। তা হলেই একমাত্র তাদের জীবন ভয় ও দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে। জয় ভীম।’
সুনীতা বলেন, ‘‘২৯ সেপ্টেম্বর, পড়ুয়ারা তাঁকে একটি চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। পড়ুয়াদের দাবি ছিল, মিথিলেশ এমন কিছু কথা সমাজমাধ্যমে লিখেছেন যা হিন্দু ধর্মের পরিপন্থী।’’ রেজিস্ট্রারের দাবি, এই পোস্টের কারণে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের জেরেই তাঁদের বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যা পরিস্থিতি তাতে মিথিলেশের এখানে না আসা উচিত বলেও জানান তিনি।
আবার অন্য দিকে, মিথিলেশের সমর্থনে এগিয়ে আসা পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে নিজের পক্ষ রাখার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, উপাচার্য সেই দাবি মেনে নিয়েছেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার জন্য একটি কমিটিও গড়ে দেওয়া হয়েছে।