টিলাওয়ালি মসজিদ। লখনউ। ছবি: শাটার স্টক।
উত্তরপ্রদেশে ফের মুঘল স্থাপত্য ঘিরে উত্তেজনার আঁচ। বহু পুরনো এক মসজিদের ঠিক সামনেই লক্ষ্মণের বিরাট মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে লখনউ নগর নিগম। ইদের সময় ঠিক এই জায়গাটিতেই প্রার্থনা করেন স্থানীয় ও বাইরে থেকে আসা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। যে কারণে সরকারের কাছে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় মৌলবিরা।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য মনে করেন, টিলাওয়ালি মসজিদ আসলে ‘লক্ষ্মণ কা টিলা’। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা লালজি ট্যান্ডন ‘আনকাহা লখনউ’ বইতে এই দাবি করার পর থেকেই ঝামেলার শুরু। সেই সুরেই সুর মিলিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল। এক ধাপ এগিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘লখনউ শহরের দেবতা লক্ষ্মণ, তাই এই মূর্তি লখনউবাসীর কাছে আসলে একটি শুভ বার্তা।’’
গোমতী-র ধারে হার্ডিঞ্জ সেতুর পাশেই ওই টিলা। তারই লাগোয়া টিলাওয়ালি মসজিদ। আসল নাম জামি মসজিদ হলেও টিলার জন্য টিলাওয়ালি মসজিদ নামেই লোকে বেশি চেনে। স্থানীয় ঐতিহাসিকদের একাংশের দাবি, ১৮৫৭ সালে ‘সিপাহী বিদ্রোহ’ দমনের সময়ে এই এলাকায় কামান দেগেছিল ব্রিটিশ সেনা। সেখান থেকেই আসলে টিলাটির উৎপত্তি। আর মসজিদটি তৈরি হয়েছিল মুঘল বাদশা ঔরঙ্গজেবের আমলে, ১৬৫৮ থেকে ১৭০৭, এই সময় কালে। যদিও মসজিদ তৈরির নির্দিষ্ট দিন বা বছর পাওয়া যায় না আর পাঁচটা মুঘল স্থাপত্যের মতোই। লখনও শহরের মেয়র সংযুক্তা ভাটিয়া জানিয়েছেন, ‘‘চিন্তার কিছু নেই, সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে ওয়ার্কিং কমিটিতে। সবার কথা মাথায় রেখেই লক্ষ্মণ মূর্তি বসানো হবে।’’
আরও পড়ুন: বিশপের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সন্ন্যাসিনীর
এলাকাটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের আওতায় পড়ে। পুরো এলাকা জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বড় ইমামবাড়া, রুমি দরওয়াজা-র মতো একাধিক নবাবি ও মুঘল স্থাপত্য। মূর্তি বসানোর আগে তাই পুরাতত্ত্ব বিভাগের অনুমতি নিতে হবে লখনও নগর নিগমকে। এর আগে ১৯৯৩-৯৪ সালেও এসেছিল মূর্তি বসানোর প্রস্তাব। যদিও নানা মহলের বিরোধিতায় তা শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। আপাতত বল তাই এখন পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের কোর্টেই আটকে।