প্রতীকী ছবি।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নাগরিক এবং সংগঠনগুলির মতামত দেওয়ার সময়সীমা আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাড়াল জাতীয় আইন কমিশন। শুক্রবার আইন কমিশনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গত বুধবার পর্যন্ত এ বিষয়ে অনলাইনে প্রায় ৫০ লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের মতামত জমা পড়েছে বলে আইন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।
গত ১৪ জুন ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং আমজনতার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল এক মাস। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ঘটনাচক্রে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২২তম আইন কমিশনের মেয়াদ প্রায় ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩১ অগস্ট পর্যন্ত করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলবীর সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন ২১-তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়ে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন সকলের জন্য একই আইন চালু করার প্রয়োজন নেই।
পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছরের এপ্রিল-মে মাসে। দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার প্রতিশ্রুতি বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। রামমন্দির, তিন তালাক, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে এ বার তা পূর্ণ হতে চলেছে বলে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ধর্মীয় সংগঠনের তরফে উঠে এসেছে বিরোধিতার সূরও।
শুক্রবার বিজেপি-শাসিত রাজ্য অরুণাচল প্রদেশ থেকেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরুদ্ধে আপত্তি উঠেছে। অরুণাচলের ২৬টি জনগোষ্ঠীর যৌথ মঞ্চ ‘অরুণাচল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবস্ ফোরাম’ আইন কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছে, ২৬টি প্রধান এবং প্রায় ১০০টি উপ-জনগোষ্ঠীর রাজ্য অরুণাচলে বিভিন্ন পারম্পরিক রীতি-নীতি পালিত হয়। তাই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সকলের উপরে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তাদের বক্তব্য, ‘মূল ভূখণ্ডে’ অভিন্ন বিধি বলবৎ করায় আপত্তি নেই, কিন্তু জনজাতিপ্রধান অরুণাচলকে এর আওতার বাইরে রাখতে হবে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের খ্রিস্টানপ্রধান তিন রাজ্য মিজোরাম, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ড সরকার এবং বিভিন্ন সংগঠনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আপত্তির কথা উঠেছে আগেই। মিজোরামের শাসকদল বিজেপির সহযোগী এমএনএফের রাজ্যসভার সাংসদ কে ভানলালভেনা আইন কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে বলেন, উত্তর-পূর্বের জনজাতিদের ক্ষেত্রে অভিন্ন বিধি প্রয়োগ করা অবাস্তব। তা কেউ মেনে নেবে না।