বর্ষণবিধ্বস্ত পটনায় বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি: পিটিআই
ক্রমশই ভয়াল হচ্ছে বিহার ও উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি। লাগাতার বর্ষণে বিহারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯ জন। জলবন্দি ও গৃহহীন অসংখ্য। এই পরিস্থিতিতে দুঃসংবাদ, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বায়ুসেনার সাহায্য চেয়েছে বিহার সরকার।
রাজধানী পটনার পাশাপাশি গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রবল বর্ষণে বানভাসি ভাগলপুর এবং কৈমুর জেলা। ভেঙে পড়েছে সড়ক ও রেলপরিবহণ ব্যবস্থা। মঙ্গলবার অবধি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকার সব স্কুলে। বানভাসি এলাকা থেকে আর্তদের উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে নৌকো এবং পুরসভার ক্রেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৯টি দলকে মোতায়েন করা হয়েছে বিহারের বিভিন্ন বর্ষণবিধ্বস্ত এলাকায়।
বিহার সরকার সাহায্য চেয়েছে বায়ুসেনার কাছ থেকে। পটনার জলমগ্ন এলাকায় বায়ুসেনার দু’টি হেলিকপ্টার থেকে শুকনো খাবার এবং ওষুধের প্যাকেট ফেলার কথা ভাবা হয়েছে। চাওয়া হয়েছে জলপরিস্রুত করার যন্ত্রও। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর তাঁদের সরকার। তিনি মনোবল না হারানোর আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যবাসীর কাছে।
আকাশপথে পটনাকে দেখলে কার্যত একটি বিশাল হ্রদের মতো মনে হচ্ছে। জলের মাঝে মাঝে বিন্দুর মতো জেগে আছে কংক্রিটের বাড়ির কিছু অংশ। রাজেন্দ্রনগর, পাটলিপুত্রের মতো পটনার নিচু অংশগুলিতে পরিস্থিতি সবথেকে ভয়াবহ। এই এলাকাগুলিতে হাসপাতাল এবং ওষুধের দোকানের মতো জরুরি পরিষেবার জায়গাগুলিও চলে গিয়েছে এক কোমর জলের তলায়।
বিহারের প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও পরিস্থিতি একইরকম ভয়াবহ। ভারী বর্ষণে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯৩ জন। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হল বালিয়া, বারাণসী এবং জৌনপুর। বালিয়া সংশোধনাগারের তিনটি ব্যারাকে জল ঢুকে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ৯৫০ জন বন্দির মধ্যে ৫০০ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে অন্যত্র। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পাম্প করে জল নামানোর চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি আধিকারিকদের সব ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
প্রবল বর্ষণে নাজেহাল উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশও। গত দু’দিনের তুমুল বর্ষণে মৃত্যুর খবর আসছে ওই চারটি রাজ্য থেকেও। রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে তুমুল বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা ছয়। জম্মু-কাশ্মীরে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। দেশের বিভিন্ন শহরে বর্ষণ পরিস্থিতির জেরে ব্যাহত হচ্ছে আকাশপথে পরিবহণও।
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি, ফের কি বিপদে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ!
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের রায় সত্ত্বেও বলি চলছে ত্রিপুরায়