লালুপ্রসাদ যাদব। ছবি: সংগৃহীত
মহাজোট ছেড়ে এনডিএ-র শরিক হলেও নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা পেল না নীতীশ কুমারের জেডিইউ। রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে নতুন মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই পেলেন না দলের নেতা, সাংসদরা। অনেকে ভেবেছিলেন, বিহারে লালুপ্রসাদ-কংগ্রেসের মহাজোট ছাড়ার পর নীতীশের দলকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেবেন মোদী। শনিবার জল্পনায় জল ঢেলে নীতীশ জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সামিলের বিষয়ে কথা হয়নি। এ সব মিডিয়া ছড়াচ্ছে। দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভার রদবদল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পায়নি জেডিইউ।’’
সুযোগ বুঝে তোপ দেগেছেন লালুপ্রসাদ। টুইটারে তিনি লেখেন— ‘আপনজনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে এমনই হয়। অন্য কেউ পাশে থাকে না। জেডিইউ নেতারা নতুন কুর্তা-পাজামা পরে মন্ত্রী হওয়ার জন্য বসেছিলেন। ডাক-ই পেলেন না।’’ লালু লিখেছেন— ‘ডাল থেকে কোনও বাঁদর এক বার নীচে পড়ে গেলে ফের দলে জায়গা পায় না।’ তাঁর নিশানা যে নীতীশ তা স্পষ্ট। কে সি ত্যাগী অবশ্য লালুপ্রসাদের মন্তব্যকে ‘নোংরা টিপ্পনি’ বলে চিহ্নিত করেন।
আরও পড়ুন: আমন্ত্রণই পাননি শরিকেরা
জেডিইউতে কানাঘুষো, এই ঘটনায় বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ হলেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে নারাজ নীতীশ। মোদী মন্ত্রিসভায় জেডিইউয়ের দু’জনকে সামিেলর কথা বলা হয়। নীতীশের পছন্দ ছিল রেল বা কৃষি মন্ত্রক। বিজেপি একটি মন্ত্রকের বেশি জেডিইউকে দিতে চায়নি। শুধু তা-ই নয়, বিজেপি ছেড়ে জেডিইউয়ে যোগ দেওয়া সন্তোষ কুশওয়াহাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করতেও আপত্তি উঠেছিল।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, অটলবিহারী বাজপেয়ী বা লালকৃষ্ণ আডবাণীর আমলে এনডিএ শরিকরা গুরুত্ব পেত। পরিস্থিতি যে আর তেমন নেই তা বোঝেন নীতীশ। ২৮২টি আসন পেয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। তাতে কমেছে এনডিএ শরিকদের খাতির। বিহারের রাজনীতিতে মোদী, অমিত শাহ নাক গলাবেন না— সেই শর্তেই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন নীতীশ।
মন্ত্রিসভায় সামিল হয়েছেন বিহারের ২ বিজেপি নেতা। লোকসভা ভোটের জন্য বিহারে উচ্চবর্ণের ভোটব্যাঙ্ক আরও মজবুত করতে চায় বিজেপি। তার প্রতিফলন দলের ব্রাহ্মণ নেতা তথা বক্সারের সাংসদ অশ্বিনী চৌবেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী করায়। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব তথা আরা কেন্দ্রের সাংসদ রাজকুমার সিংহ হন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিমন্ত্রী। রাজকুমারও উচ্চবর্ণের রাজপুত। বিহারে বিজেপির সংগঠন ও নীতীশ মন্ত্রিসভায় পিছিয়ে পড়া শ্রেণি ও দলিতদের প্রতিনিধিত্ব বেশি। তা নিয়ে দলের অন্দরে জাতপাতের সমীকরণে গোলমাল হচ্ছিল। অশ্বিনী, রাজকুমারকে মন্ত্রী করে তা সামাল দিল বিজেপি নেতৃত্ব।