ধেমাজির শিলাপথারে আসু কার্যালয়ে ভাঙচুরের পিছনে বরাক উপত্যকার কয়েক জনেরও মদত রয়েছে। তাঁদের কাজকর্মে প্রতি পুলিশ এবং গোয়েন্দা শাখা নজর রেখে চলেছে— নিজের শহরে বসে আজ এই দাবি করেছেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা শিলচরের বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল।
৬ মার্চ উদ্বাস্তু মিছিল থেকে বেরিয়ে কয়েক জন সারা অসম ছাত্র সংস্থা (আসু)-র কার্যালয়ে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পর ৯ সদস্যের পরিষদীয় প্রতিনিধি দল শিলাপথার সফর করে। দিলীপবাবু ছিলেন সেই দলের নেতৃত্বে। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে তিনি বুঝতে পেরেছেন, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অঙ্গ হিসেবেই ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাঁর দাবি, আত্মসমর্পণকারী বেঙ্গলি লিবারেশন টাইগার সদস্যরা ওই ঘটনায় জড়িত। রয়েছে মাওবাদীদের হাতও।
দিলীপবাবুর বক্তব্য, ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাঙালির প্রতি অসমিয়ারা বিদ্বেষ পোষণ করছিলেন। পরে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। গত ৩০ বছর ধরে দুই জনগোষ্ঠী শান্তিতে বসবাস করছে। বিজেপি সরকার সেই সম্প্রীতিকে পুঁজি করেই উন্নয়নে মন দিয়েছে। তাতেই বিভিন্ন পক্ষ আতঙ্কে ভুগছে, ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে।
তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ অসমবাসী সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকারই পক্ষপাতী। বরাক উপত্যকার কিছু সংগঠন নানা ভাবে তার বিরোধিতা করছে।’’ দিলীপবাবুর বক্তব্য, এ ব্যাপারে বরাকবাসীকে নতুন করে ভাবতে হবে। এই অঞ্চল যে অসমের অংশ, সে কথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অসমিয়া ভাষা-সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে আমরা চলতে পারব না। তাদের সঙ্গে নিয়েই নিজেদের সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে।’’ তিনি অসমের অন্যান্য অ-অসমিয়া জনগোষ্ঠীর উদাহরণ টেনে
বলেন, ‘‘তাঁরা অসমিয়া সংস্কৃতিকে আপন করে নিলেও নিজেদের সংস্কৃতিকে বাদ দেননি।’’
কোনও প্ররোচনার ফাঁদে পা না দিতে দিলীপবাবু আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘নিখিল ভারত বাঙালি উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের জন্য চিন্তিত নয়। তাদের চিন্তা হল, নাগরিকত্ব নিয়ে ফয়সলা হয়ে গেলে তাদের রাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে।’’ বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে সভা-মিছিল না করে শিলাপথারে কেন উদ্বাস্তু সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছেন দিলীপবাবু।