প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজপথে ডাক বিভাগের ট্যাবলোয় থাকবে কলকাতার জিপিও। নিজস্ব চিত্র
প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো থাকছে না ঠিকই, তবে এক টুকরো কলকাতা উঠে আসছে দিল্লির রাজপথে। ডাক বিভাগ বা ইন্ডিয়া পোস্ট-এর ট্যাবলোয় এ বার দেখা যাবে কলকাতার জিপিও।
যোগাযোগ মন্ত্রকের বক্তব্য, ডাক বিভাগ গত ১৬৭ বছর ধরে কাজ করছে। স্বাধীনতার ৭৫-তম বছরে ডাক, ব্যাঙ্ক ও সরকারি পরিষেবার মাধ্যমে ডাক বিভাগ কী ভাবে এখনও গোটা দেশকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে, সেই দীর্ঘ সফরকে প্রজাতন্ত্র দিবসের ট্যাবলোয় তুলে ধরা হবে। ট্যাবলোর একেবারে সামনে মহিলাদের ক্ষমতায়ন বোঝাতে থাকবে এক মহিলা ডাকপিয়নের মূর্তি। তাঁর একহাতে চিঠিপত্রের ব্যাগ, অন্য হাতে ব্যাঙ্কের কাজকর্ম করার জন্য ডিজিটাল ডিভাইস। আর ট্যাবলোর একেবারে পিছনে উঁচু মঞ্চের উপরে দেখানো হবে কলকাতা জিপিও-র সাদা ভবন।
ডাক বিভাগের এই ট্যাবলো তৈরি করছেন কলকাতারই শিল্পী বাপ্পাদিত্য চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “কলকাতার জিপিও দেশের মধ্যে সব থেকে পুরনো। দেশের হেরিটেজ ভবনগুলির অন্যতম। ডাক বিভাগের এত বছরের যাত্রার সাক্ষী।” ইতিহাস বলে, এখন বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগের যে জমিতে জিপিও ভবন দাঁড়িয়ে, সেখানেই এক সময় ছিল পুরনো ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ। নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেই দুর্গ দখল করে ভেঙে দেন।
অন্ধকূপ হত্যার ঘটনাও ঘটেছিল সেখানেই। ওই ঘটনার একশো বছরেরও পরে, ১৮৬৪ সালে ইউরোপীয় স্থাপত্যের আঙ্গিকে তৈরি হয় জিপিও-র সাদা ভবন। নকশা করেছিলেন ভারতের তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের আর্কিটেক্ট ওয়াল্টার গ্র্যামভিল। ২২০ ফুট উঁচু রাজকীয় গম্বুজ, থামে সাজানো এই ভবন তৈরিতে তখনই ব্যয় হয়েছিল সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা। ১৮৬৮ সালে ভবনের দরজা খুলে দেওয়া হয়।
বাপ্পাদিত্য জানান, কলকাতার এই হেরিটেজ ভবনের প্রেক্ষাপটেও সামনে থাকবে শ্রীনগরের ডাল লেকের ভাসমান ডাকঘর এবং চিরাচরিত লাল ডাকবাক্স। ডাকটিকিটের ছবির মাধ্যমে তুলে ধরা হবে স্বাধীনতা আন্দোলন। তবে ২৬-এর রাজপথে আসল নজর থাকবে ডাকপিয়নদের উপরে, পায়ে হাঁটা ডাক হরকরা থেকে এখনকার সাইকেলে বা ই-বাইকে চেপে চিঠি বিলির মাধ্যমেই তুলে ধরা হবে সময়ের যাত্রাপথ।