ফাইল চিত্র।
কেএলও-র তরফে আসা শান্তি আলোচনার প্রস্তাবে সার্বভৌমত্বের প্রসঙ্গ নেই। এই প্রথম সরকারি ভাবে শান্তি আলোচনা নিয়ে মুখ খুলে এ কথা জানিয়ে দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
হিমন্তের উদ্যোগেই কেএলও-র সঙ্গে কেন্দ্রের শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। কেএলও প্রধান জীবন সিংহ নিজেও আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, আলোচনা সফল করার ব্যাপারে তাঁর একমাত্র আস্থা রয়েছে হিমন্তের উপরেই। সব ঠিকমতো এগোলে এ বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন তিনি ও আলোচনার সূত্রপাত করা তাঁর ধর্মপুত্র দিবাকর দেবরাজ সিংহ দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে দেশের স্বাধীনতার ‘অমৃৎ মহোৎসবে’ যোগ দেওয়ার কথা তাঁদের। আলোচনায় অংশ নিতে কিছুদিন আগেই গুয়াহাটি এসেছেন সংগঠনের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন বর্মণ ও প্রাক্তন উপ-সেনাধ্যক্ষ মালখান সিংহ। দিবাকরের তরফে শান্তি আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে জানানো হলেও সরকারি তরফে এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ প্রায় সকলেরই। আলোচনায় অংশ নেওয়া পুলিশ কর্তারাও মন্তব্যে নারাজ ছিলেন।
রবিবার স্বাধীনতা দিবসের তিরঙ্গা অভিযান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকের পর শান্তি আলোচনা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে হিমন্ত বলেন, “কেএলও-সহ সকলের সঙ্গেই আমাদের আলোচনার দরজা খোলা। কেএলও প্রধান জীবন সিংহের সঙ্গে আমার বেশ কয়েকবার ফোনে কথা হয়েছে। তিনি অডিয়ো ক্যাসেটও পাঠিয়েছেন আমায়। তাঁরা যে শর্তগুলি দিয়েছেন, সেখানে সার্বভৌমত্বের শর্ত নেই এবং তাঁদের পাঠানো শর্তগুলি যদি সত্যি হয়, তবে সরকারের তরফে আলোচনায় কোনও অসুবিধা নেই।” তিনি আরও বলেন, “সরকারের সঙ্গে এই ধরনের সংগঠনের আলোচনার নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। শান্তি কমিটি বা তেমন কমিটি গড়ে আলোচনা চালালে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিকরণের সম্ভাবনা থেকে যায়।”
এ দিকে, হিমন্তকে উদ্দেশ করে ‘ভয়েস মেসেজ’ পাঠিয়ে জীবন সিংহ শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারীদের নাম জানান। উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি ধর্মপুত্র দেবরাজের। পরিবর্তে দেবজিৎ সিংহের নাম রয়েছে। বাকি মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আছেন আক্রাসু-র প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে রাজবংশী জাতীয় পরিষদের নেতা বিশ্বজিৎ রায়, হর্ষবর্ধন বর্মণ, প্রাক্তন ডেপুটি কম্যান্ডার টম অধিকারী ও মালখান সিংহ। দিবাকর ও হর্ষবর্ধনদের দাবি ছিল, টমকে জীবন মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চাইলেও বঙ্গ সরকার তাঁকে আসতে দিচ্ছে না। আজ প্রস্তাবিত শান্তি কমিটির বিশ্বজিৎ, হর্ষবর্ধন ও মালখান সিংহ বঙ্গাইগাঁওয়ে আলোচনায় মিলিত হন। ফোনে কথা বলা হয় টম ও দেবজিতের সঙ্গে। পরে বিশ্বজিৎ ফোনে বলেন, “আমরা মনে করছি কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকার ও জীবন সিংহের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হোক। সেখানে অন্য কোনও মধ্যস্থতাকারীর দরকার নেই। আমাদের তরফেও আলাদা করে কোনও পরামর্শ বা দাবি নেই। সব ধরনের সহযোগিতার জন্য আমরা তৈরি আছি।”