KLO

KLO: সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা হয়নি, দাবি না মানলে বড় আন্দোলন, রাজ্যকে সতর্ক করলেন জীবন সিংহ

পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, কেএলও এখনও সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেনি, তাই দাবি না মানলে আন্দোলন আরও ভয়ঙ্কর হবে।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১০
Share:

কামাখ্যা মন্দিরে টম অধিকারী (বাঁ দিকে) এবং দেবরাজ সিংহ (ডান দিকে)। ফাইল ছবি

এ বার আর ভিডিয়ো বার্তা নয়, ধর্মপুত্র বলে পরিচিত দেবরাজ সিংহের মুখে শোনা গেল কেএলও প্রধান জীবন সিংহের হুঁশিয়ারি। দেবরাজের দাবি, জীবন জানিয়েছেন, পৃথক রাজ্যের দাবি ছাড়া শান্তি আলোচনা সম্ভব নয়। এই সংক্রান্ত দাবিদাওয়া পূরণ না হলে কেএলও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ করবে বলেও জীবনের ভাষ্যে জানিয়েছেন দেবরাজ। একই সঙ্গে এই জীবন-বার্তায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, কেএলও এখনও সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেনি, তাই দাবি না মানলে আন্দোলন আরও ভয়ঙ্কর হবে। যদিও অসমের ক্ষেত্রে সংঘর্ষবিরতি চলবে বলেই দাবি তাঁর।

Advertisement

পৃথক রাজ্যের দাবি অসম মানেনি। তা হলে তাদের কেন বাংলা থেকে আলাদা করছেন? এর জবাবে আনন্দবাজারকে ফোনে দেবরাজ বলেন, ‘‘আমাদের আলোচনা কেন্দ্রের সঙ্গে। কেন্দ্র রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে কেএলও-র দাবিগুলি সমাধানের কথা বলেছে। সেখানে পৃথক রাজ্যের কথাও থাকছে। কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা ইতিবাচক দিকে যাচ্ছে। কোচ এলাকার একত্রীকরণ চুক্তি হয়েছিল কেন্দ্রের সঙ্গে। তাই আলোচনাও কেন্দ্রের সঙ্গে হবে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতো তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা নেই।’’ এই সূত্রে প্রাক্তন কেএলও সদস্যদের নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, তা-ও গুরুত্বহীন বলে দাবি করেছেন জীবন। তবে তাঁর এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী টম অধিকারীকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর মাধ্যমে আলোচনা চালানোর চাপ দিচ্ছে বলেও দেবরাজের মাধ্যমে দাবি করেছেন জীবন।

জীবনের এই ‘বার্তা’ নিয়ে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের পুলিশ প্রশাসনের তরফে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাওয়া হয়নি। তবে জেলার এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় না-বসলে তা ফলপ্রসূ হওয়ার যে সম্ভাবনা নেই, সেটা জীবনও জানেন বলে আমাদের বিশ্বাস।” আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন এক কেএলও জঙ্গিও এ দিন ফের বলেন, “জীবন সিংহ এ রাজ্যের বাসিন্দা। ফলে এ রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না-হলে সেই শান্তি বৈঠক কখনওই সম্পূর্ণ হতে পারে না।”

Advertisement

এর পাশাপাশি টম অধিকারীদের দিয়ে জীবনের উপরে পাল্টা চাপ সৃষ্টির কাজও শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি আলোচনায় না-বসলে টমরাই কথা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। কোচবিহারের রাজবংশী তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়ও বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকার স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে আলোচনার প্রশ্নই নেই।”

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, জীবন সিংহের পক্ষে রাজ্যের দাবি ছেড়ে দিয়ে আলোচনায় বসা কঠিন। তবে এখন লোকবলের দিক থেকে তিনি কিছুটা হলেও দুর্বল। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁর উপরে পাল্টা চাপ দিচ্ছে। জীবন খুব ভাল ভাবে জানেন যে, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া শান্তি বৈঠক সম্পূর্ণ হবে না। আলোচনার টেবিলে
বসার আগে তাই দু’পক্ষে একপ্রকার স্নায়ুযুদ্ধ চলছে।

(সহ-প্রতিবেদন: নমিতেশ ঘোষ, পার্থ চক্রবর্তী)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement