ফাইল চিত্র
পুলিশকে মহকুমা শাসক নির্দেশ দিচ্ছেন, বিক্ষোভকারী কৃষকদের এমন ভাবে মারা হোক যাতে তাঁদের মাথা ‘ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়’। সেই নির্দেশ ক্যামেরায় ধরা পড়ার পরে নিন্দার ঝড় ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে হরিয়ানা সরকারের এক কর্তা আশ্বাস দেন— তরুণ ওই আইএএস অফিসারকে এ জন্য শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু সোমবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর জানিয়ে দিলেন— “ওই আইএএস অফিসার হয়তো একটা বেফাঁস কথা বলে ফেলেছেন, কিন্তু কড়া হাতে বিক্ষোভ দমন দরকার ছিল। তিনি সেটাই করেছেন।” স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ওই আমলার পাশে দাঁড়ানোয় মনে করা হচ্ছে, তাঁর শাস্তির সম্ভাবনা শূন্য।
শনিবার হরিয়ানার কারনালে আন্দোলনকারী কৃষকদের উপরে পুলিশ লাঠি চালানোয় এক জন মারা যান। গুরুতর জখম হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১০ জন। রবিবার রাজ্যে ২ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে কারনালে ‘পুলিশি বর্বরতার’ প্রতিবাদ করেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া কৃষকেরা। কারনালের ঘটনার একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, মহকুমাশাসক আয়ুশ সিন্হা পুলিশকে যথাসম্ভব বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিতে গিয়ে বলছেন, “মারো, মারো। মাথা ভেঙে দাও ওদের! আমি দেখতে চাই তোমরা ওদের মাথা গুঁড়িয়ে দিচ্ছ।” তার পরেই পুলিশ নির্দেশ পালনে তৎপর হয়। কারনালের জেলাশাসক নিশান্ত যাদব কালই ওই আমলার পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, “ওই অফিসার কী বলেছেন সেটা বড় কথা নয়, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া হওয়ার প্রয়োজন ছিল। তিনি সেটাই করেছেন। তবে হ্যাঁ, কিছু শব্দ আছে যা উচ্চারণ না করলেই ভাল হয়।” এর পরে সরকারের তরফে এক কর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, মহকুমাশাসককে শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
এর পরে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী খট্টর কার্যত মহকুমাশাসকের পাশেই এসে দাঁড়ালেন। যে ভাবে কড়া হাতে ওই অফিসার বিক্ষোভ মোকাবিলা করেছেন, তার প্রশংসা করেন। বলেন, “কৃষকদের বুঝতে হবে, আন্দোলনে আর মানুষের সহানুভূতি নেই। মানুষ ভাল ভাবে নিচ্ছেন না তাঁদের এই আন্দোলনকে। আমি তো প্রতিদিন ফোন পাই, কেন কড়া হাতে তাঁদের মোকাবিলা করে বিক্ষোভের জায়গা খালি করে দেওয়া হচ্ছে না?” খট্টরের দাবি, তাঁর সরকার সংযত আচরণ করছেন বলে কৃষকেরা তার সুযোগ নিচ্ছেন। কারনালের ঘটনা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওই অফিসার একটা বেফাঁস কথা হয়তো বলে ফেলেছেন, কিন্তু বিক্ষোভ মোকাবিলা যে ভাবে করা দরকার ছিল, তিনি সেটা দক্ষ ভাবেই করেছেন।”