শীর্ষ খালিস্তানি জঙ্গি হরমিন্দর সিংহ মিন্টু।
জেলে ভেঙে পালানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খালিস্তানি জঙ্গি নেতা হরমিন্দর সিংহ মিন্টুকে দিল্লি-হরিয়ানার সীমানা থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার ফিল্মি কায়দায় ১০ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতী হরমিন্দর-সহ ৬ জনকে পঞ্জাবের নাভা সেন্ট্রাল জেল থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য প্রশাসনে। চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয় পঞ্জাব ও হরিয়ানা-সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে। দিল্লি পুলিশকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে রাতভর তল্লাশি অভিযান চালায় হরিয়ানা ও দিল্লি পুলিশের একটি দল। সোমবার সকালে ওই খালিস্তানি জঙ্গিকে দিল্লি-হরিয়ানার সীমানা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে বাকি দুষ্কৃতীদের এখনও খোঁজ পায়নি পুলিশ।
রবিবার তখন সকাল ৯টা। নাভা সেন্ট্রাল জেলের সামনে একটা গাড়ি এসে থামে। পুলিশের উর্দি পরা কয়েক জন দুই ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে জেলের মূল গেটের সামনে নিয়ে আসে। অপরাধী ধরে নিয়ে এসেছে এই বলে গেট খুলতে বলা হয় সেখানে মোতায়েন কারারক্ষীদের। পুলিশের ছদ্মবেশে যে দুষ্কৃতীরা এ ভাবে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে ঢুকে পড়েছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কারারক্ষীরা। জেলের ভিতরে ঢুকেই তাদের আসল রূপ বেরিয়ে আসে। যে সেলে তাদের সাগরেদরা ছিল সেখানে সটান চলে যায় তারা। গুলি করে সেলের তালা খুলতেই কারারক্ষীদের টনক নড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। প্রায় ১০০ রাউন্ড গুলি চালায় তারা। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। কিন্তু তত ক্ষণে খালিস্তানি জঙ্গি হরমিন্দর-সহ ৬ জনকে নিয়ে পগারপার হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
তল্লাশি অভিযান চালিয়ে রবিরার সন্ধেতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল পলবিন্দর সিংহ পিন্ডা নামে এক দুষ্কৃতীকে। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে জেল ভেঙে পালানোর ছক কষেছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী ভিকি গোন্ডার। কিন্তু সেই মিশনে খালিস্তানি জঙ্গি হরমিন্দর ও অন্য বন্দি কাশ্মীর সিংহের সামিল হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু এই সুবর্ণ সুযোগ ছাড়তে চায়নি তারাও বলে জানিয়েছে ধৃত দুষ্কৃতী।
পঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, হরমিন্দর খালিস্তান আন্দোলনকে ফের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছিল। আইএসআই চরদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। রবিবারের এই ঘটনার পরই পঞ্জাব সরকার জেলের দুই শীর্ষ আধিকারিককে সাসপেন্ড করে। অতিরিক্ত মুখ্য সচিব জগপাল সিংহ সিধুর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলে ভেঙে পালানোর ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে পঞ্জাবে। বিরোধীরা প্রকাশ সিংহ বাদল সরকারকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে। কংগ্রেস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, রাজ্যে ফের সন্ত্রাসবাদ মাথাচারা দিচ্ছে। জেল পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদল ও উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদল ইঙ্গিত দেন এই ঘটনার পিছনে পাকিস্তানের মদত রয়েছে।
আরও খবর...