বাদুড় থেকেই ছড়ায় নিপা ভাইরাস।
গত কয়েক দিন ধরেই দেশ জুড়ে নিপা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের বলি অন্তত ১২ জন। যার শুরুটা হয়েছিল কেরল থেকে। সেই আতঙ্কের প্রভাব পড়ল কেরলের পর্যটন ব্যবসাতেও।
কেরলের কোঝিকোড়েই চলতি সপ্তাহের গোড়ায় প্রথম নিপার উপস্থিতি শোনা গিয়েছিল। তার পর থেকেই জাঁকিয়ে বসেছে ভাইরাস আতঙ্ক। তবে কোচির স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, সংবাদমাধ্যম অহেতুক বাড়াবাড়ি করছে এবং তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন ব্যবসা। জুন-জুলাই মাসে উত্তর ভারতে ছুটির মরসুম। এই সময়টায় বৃষ্টি আসে কেরলে। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্যের সঙ্গে হাউসবোট, আয়ুর্বেদ মাসাজও কেরলের বিশেষ আকর্ষণ। লম্বা ছুটিতে প্রচুর মানুষ এই সময়ে ভিড় জমান কেরলে। তবে নিপার হানায় পাল্টে গিয়েছে পর্যটনের সেই চেনা ছবি।
টুরিজম প্রফেশন ক্লাবের সচিব পল জানান, নিপার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই কেরল সফর বাতিল করছেন পর্যটকেরা। এখনও পর্যন্ত ৫০-৬০ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়েছে। শুধু ভারত নয়, উপসাগরীয় দেশগুলির পর্যটকেরাও আতঙ্কিত। একই সুর শোনা গেল স্থানীয় টুরিস্ট গাইড অজয় কুমারের গলাতেও। তিনি জানান, কোঝিকোড়ের একটা ছোট অঞ্চলেই নিপার প্রভাব রয়েছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের খবরের জেরে মানুষ ধারণা, গোটা কেরলেই ছড়িয়ে পড়েছে নিপা ভাইরাস। মার খাচ্ছে ব্যবসা। কেরল সফররত পর্যটকেরা এখনও পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও ভয় পাচ্ছেন তাঁরাও। নিজেদের মতো প্রতিষেধক ব্যবস্থাও নিচ্ছেন তাঁরা। এমনই এক পর্যটক বলেন, ‘‘নিরাপত্তার খাতিরে বাড়ির রান্না খাচ্ছি। বাইরের খাবার, বিশেষত ফল একেবারেই খাওয়া হচ্ছে না।’’ ভাইরাসের জেরে কোঝিকোড়কে বাদ দিয়েই কেরল সফর সারছেন তিনি। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের তরফেও জারি করা হয়েছে সতর্কতামূলক নির্দেশিকা। কোঝিকোড়, মলপ্পুরম, ওয়েনাড়, কান্নুর জেলা এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের। ভাইরাস নিয়ে পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে ডেকেছে সরকার।
ফলের মাধ্যমেই নিপা ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে মানুষের দেহে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত কেরলের ফলের ব্যবসাও। নিপায় আক্রান্ত হিমাচল প্রদেশও। সেখানকার স্বাস্থ্য দফতরের স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। ছত্তীসগঢ়েও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার তেলঙ্গানাতেও নিপায় আক্রান্ত সন্দেহে দু’জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।