ঝড়ের তাণ্ডবে উপড়ে গিয়েছে উপকূলের বেশির ভাগ গাছ। রবিবার মেঙ্গালুরুতে। পিটিআই
প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কেরলের বিভিন্ন প্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে আজ বিকেলে মৌসম ভবন ওই রাজ্যের চারটি জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। অতি বর্ষণের জেরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তেলঙ্গানা সরকার আগামিকাল থেকে তিন দিন রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্র-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছন্দে বর্ষা। যার জেরে বহু রাজ্যের জনজীবন বিপর্যস্ত। কেরলের পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। রাজ্যের উত্তরাংশের কোঝিকোড়, ওয়েনাড, কুন্নর এবং কাসারগোড় জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এ ছাড়াও তিরুঅনন্তপুরম এবং কোল্লাম বাদে ওই দক্ষিণ রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতে ইয়োলো অ্যালার্ট জারি হয়েছে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার কেরলের বিভিন্ন অংশে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে বৃষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্যে ছ’জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নষ্ট হয়েছে বহু বাড়ি।
বৃষ্টির জেরে বেসামাল পরিস্থিতি তেলঙ্গানায়ও। রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রিসভার সকল সদস্য, মুখ্যসচিব এবং প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে আজ বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। এর আগে সব জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। পরে তিনি জানান, আসিফাবাদ, নির্মল, নিজ়ামাবাদ, পেড্ডাপল্লি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলায় কন্ট্রোল রুম খুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের। নিচু এলাকায় বসবাসকারীদের দ্রুত যাতে সরিয়ে নেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন নদী ও জলাশয়ের জল বর্ষার কারণে উপচে যাওয়ায় বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আসিফাবাদ, নিজ়ামাবাদ-সহ রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিহতে পারে।
মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। রাজ্যের ১৩০টি গ্রাম কার্যত বিধ্বস্ত। ১২৮টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। বৃষ্টি সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্ঘটনার জেরে গত কাল পর্যন্ত রাজ্যে ৭৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১০ দিনে শতাধিক গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, আগামী বুধবার পর্যন্ত কোঙ্কণ অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। গুজরাতের একাংশের অবস্থাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দু’টি জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত ৭০০-র বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ড, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, গোয়া, কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলির বেশ কয়েকটি জায়গায়।