কেরল বিধানসভার স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণন। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
রাজ্যে আর্থিক সঙ্কট। তা কাটিয়ে উঠতে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরল সরকার। সেই মর্মে রাজ্য বাজেট পেশ হয় শুক্রবার। আর ঠিক তার পর দিনই সামনে এল সম্পূর্ণ বিপরীত একটা ঘটনা। সরকারি অর্থে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে চশমা পরার অভিযোগ উঠল কেরল বিধানসভার স্পিকারের বিরুদ্ধে! যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
কোচির এক আইনজীবী ডি বি বিনু শনিবার এই তথ্য সামনে আনেন। তিনি তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) কেরল বিধানসভার স্পিকার পি শ্রীরামকৃষ্ণনের চশমার দাম এবং তার বিল কী ভাবে মেটানো হয়েছে জানতে চান। তাতেই চমকে দেওয়ার মতো এই তথ্য সামনে আসে।
বিনুর প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়েছে, স্পিকার মোট প্রায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে চশমা কিনেছেন। এর মধ্যে ৪৫ হাজার টাকা লেন্সের দাম আর ৪,৯০০ টাকা ফ্রেমের। যার পুরোটাই সরকারি খাত থেকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬ সরকারি খাত থেকে স্পিকার ৪ লক্ষ ২৫ হাজার টাকায় নিজের মেডিক্যাল বিলও মেটান।
আরও পড়ুন: বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় দুই কাশ্মীরি ছাত্রকে মারধর, হেনস্থা
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে স্পিকার জানান, বহুদিন থেকেই তাঁর দেখতে অসুবিধা হচ্ছিল। তার উপর সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতেও সমস্যা হচ্ছিল। চিকিৎসকই তাঁকে ভাল মানের চশমা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
কেরলে মন্ত্রী-আমলাদের দামি চশমা ব্যবহার করার ঘটনা এর আগেও সামনে এসেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা সরকারি অর্থে ২৮ হাজার টাকার চশমা কিনে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০০৪ সালে কেরলে তৎকালীন স্পিকার ভক্কম পুরুষোত্তমন এই অযাচিত অর্থ ব্যয়ে লাগাম টানতে উদ্যত হন। চশমার জন্য সরকারি খাতে সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা ধার্য হওয়া উচিত বলে প্রস্তাব রাখেন তিনি। যদিও তা প্রস্তাবের আকারেই থেকে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
সিপিএম আমলে চশমার জন্য ৩০,০০০ টাকা দাবি জানিয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়। পরে এতটাই বিতর্ক হয় যে, তিনি টাকা নেননি। ২০১১ সালে তৎকালীন নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ উন্নয়ণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র আবার চশমার জন্য ১ লক্ষ টাকার বিল জমা দেন। তা নিয়েও তীব্র বিতর্ক হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে তিনি তা আবার সরকারকে ফিরিয়ে দেন। এবং দাবি করেন, ভুলবশত এমন বিল হয়ে গিয়েছিল।