দেরিতে হলেও রাজধানীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে একযোগে কাজ করতে এগিয়ে এল দিল্লি ও হরিয়ানা। জাতীয় পরিবেশ আদালতের কাছে ভর্ৎসনা শোনার পরে দিল্লিতে দূষণ কমাতে রাজধানীতে প্রায় পাঁচশো ইলেকট্রিক বাস নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার।
এমনিতেই দূষণ প্রশ্নে জাতীয় আদালতের কড়া মনোভাবে অস্বস্তিতে দিল্লি সরকার। তারই মধ্যে আজ তথ্যের অধিকার আইনে জানা যায়, গত দু’বছরে পরিবেশ সংক্রান্ত সেস থেকে দিল্লি সরকারের রাজস্বে যে ৭৮৭ কোটি জমা পড়েছে তার মধ্যে মাত্র ৯৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। দূষণের এই বিতর্কিত আবহাওয়ায় এই তথ্য সামনে আসায় তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ জানান, ‘‘সরকার ওই টাকায় দ্রুত ৫০০টি ইলেকট্রিক বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ কিন্তু কেন এত দিন ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি? সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রকেই দুষেছেন ওই আপ নেতা। সৌরভের কথায়, ‘‘দিল্লির উপরাজ্যপাল বাস ডিপোর জন্য জমির ছাড়পত্র না দেওয়ায় বাস কিনতে সমস্যা হচ্ছিল।’’ আজ আবার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পার্কিং ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন দিল্লির পরিবহণ মন্ত্রী কৈলাশ গহলৌত। সম্প্রতি দিল্লির দূষণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার কমাতে পার্কিং ভাড়া চারগুণ বাড়ানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। গহলৌতের অভিযোগ, ‘‘বর্ধিত ভাড়া এড়াতে লোকেরা রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি রেখে যাচ্ছেন। ফলে রাস্তায় যানজট আরও বেড়ে যাচ্ছে।’’
তবে আজ দুপুরে দিল্লির স্বার্থে রাজনীতি ভুলে দূষণ কমাতে একমত হন দিল্লি ও হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ও মনোহরলাল খট্টর। গতকাল থেকেই চণ্ডীগঢ়ে রয়েছেন অরবিন্দ। কাল পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের সঙ্গে বৈঠক করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আজ খট্টরের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকের শেষে দুই মুখ্যমন্ত্রী এক যোগে জানান, ‘‘দূষণ কমাতে কী ভাবে ফসলের গোড়া কাটা বন্ধ করা যায় এবং গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।’’ খট্টর বৈঠকে কেজরীবালকে আশ্বাস দিয়ে জানান, কৃষকেরা যাতে ফসলের গোড়া পুড়িয়ে না দেয় সে জন্য কঠোর পদক্ষেপ করা শুরু করেছে তাঁর সরকার। ইতিমধ্যেই প্রায় দু’হাজার কৃষককে ওই অপরাধে জরিমানা করা হয়েছে।