প্রতীকী ছবি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে নাজেহাল হয়েছিল দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য। সাম্প্রতিক কোভিড স্ফীতিতে সংক্রমণের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুপাত কিছুটা কম। তবে এই পরিসংখ্যান বাড়তে পারে ধরে নিয়ে রাজ্যগুলিকে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে বলল কেন্দ্র।
বুধবার রাজ্য সরকারকে লেখা একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, সরকার যেন এখন থেকে মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত করার ব্যাপারে তৎপর হয়। এ ছাড়া সমস্ত হাসপাতাল, নার্সিংহোম এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেনে সরবরাহের উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছেন রাজেশ। দু’পাতার চিঠিতে রাজ্য সরকারকে ১১টি বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্যকে। সেগুলি কী দেখে নিন—
১) যে সমস্ত চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীকে ভর্তি করে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা রেয়েছে, সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে অতিরিক্ত মেডিক্যাল অক্সিজেন মজুত রাখা।
২) লিক্যুইড মেডিক্যাল অক্সিজেনের ট্যাঙ্ক পূর্ণ রাখা, যাতে প্রয়োজনে অক্সিজেন সরবরাহে সমস্যা না হয়।
৩) অক্সিজেন প্ল্যান্ট গুলি যাতে চালু থাকে তার ব্যবস্থা করা।
৪) পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত রাখা। এবং ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডারে দ্রুত অক্সিজেন ভরার ব্যবস্থা রাখা।
৫) সমস্ত জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের কাছে যে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠানো হচ্ছে, তা কাজ করছে কি না যাচাই করে নেওয়া।
৬) ভেন্টিলেটরস, বাইপ্যাপ, এসপিওটু সিস্টেমের মতো জীবনদায়ী মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি যাতে দরকারে সহজে পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা রাখা।
৭) অক্সিজেন সিলিন্ডার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছনোর পর সেগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা।
প্রতীকী ছবি।
৮) অক্সিজেন সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং পেশাগত দক্ষতা সংক্রান্ত মন্ত্রক ইতিমধ্যেই অক্সিজেন প্ল্যান্টের কর্মীদের জন্য ১০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ৪০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণে মাস্টার ট্রেনার এবং অক্সিজেন প্ল্যান্টের যে কোনও সমস্যা দূর করতে পারবেন এমন প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করার জন্য ১৮০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। রাজ্য সরকার যেন প্রশিক্ষিত কর্মীই এ ক্ষেত্রে নিয়োগ করে।
৯) বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবাগুলির অক্সিজেনের যোগান দেওয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া
১০) অক্সিজেন কন্ট্রোল রুম তৈরি করা যাতে, যে কোনও অক্সিজেন সংক্রান্ত সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যায়।
১১) যে সমস্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে অক্সিজেন পরিষেবা পাওয়া যাবে সেগুলির নাম ওডিএস ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নথিভুক্ত করা ।
স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন, আগাম এই ব্যবস্থাগুলি নেওয়া থাকলে আগামী দিনে যদি করোনা স্ফীতি গুরুতর আকার নেয়, তা হলেও তা ভাল ভাবে মোকাবিলা করতে পারবে রাজ্য সরকার।