বিরোধী শাসিত রাজ্যে মোদী সরকার নিযুক্ত রাজ্যপালের ভূমিকার বিরুদ্ধে এককাট্টা হওয়ার পাশাপাশি, আগামী জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী শিবিরের তরফে কাউকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার বিষয়েও কথাবার্তা হয়।
ফাইল চিত্র।
গত ডিসেম্বরের গোড়ায় মুম্বই সফরে গিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় আড়াই মাস পরে এ বার সেই মুম্বইতে অবতীর্ণ হলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। বৈঠক করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে।
মমতার সফর ও রাওয়ের সফরের ঘোষিত উদ্দেশ্য একই। বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির জোট। অঘোষিত উদ্দেশ্যও এক। কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই আঞ্চলিক দলগুলির বিরোধী জোট তৈরির চেষ্টা।
মহারাষ্ট্রের সফরের আগেই মমতার সঙ্গে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কথা হয়েছিল। বিরোধী শাসিত রাজ্যে মোদী সরকার নিযুক্ত রাজ্যপালের ভূমিকার বিরুদ্ধে এককাট্টা হওয়ার পাশাপাশি, আগামী জুলাইয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী শিবিরের তরফে কাউকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার বিষয়েও কথাবার্তা হয়। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, পওয়ারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী হতে পারেন।
মুম্বইতে পওয়ারের সিলভার ওক বাংলোয় গিয়ে তাঁর সঙ্গে আজ বৈঠকের পরে কেসিআর জানিয়েছেন, পওয়ার তাঁকে ‘আশীর্বাদ’ করেছেন। বৈঠকে পওয়ার-কন্যা সুপ্রিয়া সুলেও হাজির ছিলেন। রাও বলেন, ‘‘পওয়ারের অভিজ্ঞতা অমূল্য। এই ধরনের বৈঠক চলতে থাকবে।’’ বিরোধী দলের নেতারা খুব শীঘ্রই একসঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। উদ্ধবের সঙ্গে রাওয়ের বৈঠকের পরে দু’জনে মিলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। উদ্ধব জানান, তিনি ও রাও আগামী দিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করবেন। বিজেপিকে সরিয়ে দেশকে সঠিক পথে নিয়ে আসাই হবে তাঁদের লক্ষ্য। উদ্ধবের মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তা পরে আলোচনা করা যাবে।
মহারাষ্ট্রে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে পওয়ার এনসিপি-র সঙ্গে শিবসেনা, কংগ্রেসকে এক মেরুতে নিয়ে এসেছিলেন। জাতীয় স্তরেও কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি-বিরোধী জোট
সম্ভব নয় বলে পওয়ার মত দিয়েছেন। রাও সম্প্রতি বিজেপি, কংগ্রেসের সমালোচনা করে তৃতীয় ফ্রন্টের ডাক দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য তিনি কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে, এত দিন বিজেপির সঙ্গে আপস করে চলা রাওকে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
আজ অবশ্য রাও মুম্বইতে উদ্ধবকে পাশে নিয়ে বিজেপি জমানায় বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগানোর অভিযোগ তুলেছেন। উদ্ধবও বিজেপির হিন্দুত্বর সমালোচনা করে বলেন, ‘‘হিন্দুত্ব ভুল রাজনীতি শেখায় না। কিছু লোক শুধু নিজেদের লক্ষ্য পূরণে কাজ করে চলেছে, তাতে দেশ গোল্লায় যায় যাক। আমাদের দেশকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কে হবে, পরে আলোচনা করা যাবে।’’