রবিবার ভুবন্শ্বের চন্দ্রশেখর রাও।
কংগ্রেস-তেলুগু দেশমকে হারিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন তেলঙ্গানায়। তার পরে এ বার জাতীয় স্তরে অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেস একটি জোট গড়তে সফরে বেরিয়েছেন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির সভাপতি কে চন্দ্রশেখর রাও। রবিবার বিশাখাপত্তনম ঘুরে রাওয়ের বিমান নামে ভুবনেশ্বরে। সন্ধ্যায় বিজু জনতা দলের নেতা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। সোমবার কলকাতা পৌঁছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা। কংগ্রেস অবশ্য বলছে, বিজেপির হাত শক্ত করাই লক্ষ্য রাওয়ের। রাহুল গাঁধীর পরিশ্রমে যে মহাজোট দানা বাঁধছে, তাতে বিঘ্ন ঘাটাতে বিজেপিই তাঁকে আসরে নামিয়েছে।
বেশ কোমর বেঁধেই নেমেছেন কেসিআর। এক মাসের জন্য তাঁর দল একটি বিমান ভাড়া নিয়েছে, যাতে সফরসঙ্গী হিসেবে রাওয়ের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর পরিবারের লোকেরাও। হায়দরাবাদে টিআরএসের পক্ষে জানানো হয়েছে, তাঁদের নেতার লক্ষ্য দু’টি। জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ও বিজেপিকে বাদ দিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির একটি জোট তৈরির দৌত্য তো রয়েছে, সঙ্গে তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পরে তীর্থদর্শনও থাকছে। প্রথমে বিশাখাপত্তনম পৌঁছে সারদা পীঠমে পুজো দিয়েছেন তিনি। আশীর্বাদ নিয়েছেন শঙ্করাচার্য স্বরূপানন্দ স্বামীর। এর পরে তাঁর বিমান নামে ভুবনেশ্বরে। নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে বৈঠকের পরে বলেন, ‘‘রাজ্যগুলির স্বার্থে ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে আঞ্চলিক দলগুলির জোট বাঁধা খুবই দরকার। আমরা দু’জনেই মনে করি, কংগ্রেস ও বিজেপিকে বাদ দিয়ে একটি বিকল্প সরকার হওয়া খুবই দরকার।’’
সোমবার সকালে ভুবনেশ্বরে কোণার্ক দর্শন করে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে পুজো দেবেন টিআরএস নেতা। তার পরে তাঁর বিমান নামবে কলকাতায়। বিকেলে নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা। কালীঘাটে সপরিবার পুজো দিয়ে রাতেই দিল্লি যাওয়ার কথা। সেখানে বড়দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও রাওয়ের বৈঠক নির্ধারিত। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি। দলের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েই মন্ত্রীদের কাছে দরবার করবেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মোদীর প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা আমলাদের ‘পোস্টিং’ শিকেয় এ রাজ্যে
কংগ্রেস অবশ্য বলছে, বেশির ভাগ সময়টা নিজের বিলাসবহুল খামারবাড়িতে কাটিয়ে এখন চাটার্ড বিমানে সপরিবার তীর্থযাত্রায় বেরোলেন মুখ্যমন্ত্রী রাও। কংগ্রেস নেতা জি নারায়ণ রেড্ডি বলেন, ‘‘কংগ্রেস যে ৩ রাজ্যে জয়ী হয়েছে, ইতিমধ্যেই সেখানে কৃষকদের ঋণ মকুব করা হয়েছে। তেলঙ্গানায় সে সবের ধারে-কাছে না গিয়ে প্রমোদভ্রমণে বেরোলেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ রেড্ডির দাবি, বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করে মহাজোট ভাঙার খেলায় নেমেছেন রাও। আসলে তাঁর লক্ষ্য বিজেপির হাত শক্ত করা।