শঙ্করনারায়ণন
চাপের মুখে ইস্তফা দিলেন আর এক রাজ্যপাল। মহারাষ্ট্রের রাজভবন থেকে শঙ্করনারায়ণনকে গত কালই মিজোরামে বদলি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু, উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব শঙ্করনারায়ণন যে নেবেন না সেই ইঙ্গিত সরকারি সূত্রে আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই ইউপিএ জমানায় নিযুক্ত রাজ্যপালদের সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। বেশ কয়েক জন রাজ্যপালকে ফোন করে সরে যেতে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী। তা নিয়ে প্রথম মুখ খুলেছিলেন শঙ্করনারায়ণনই। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে কোনও পদই স্থায়ী নয়। আমাকে কোনও উপযুক্ত পদমর্যাদার ব্যক্তি সরতে বললে ভেবে দেখব।” তাঁকে সরতে বলার উপযুক্ত পদমর্যাদা যে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেই তা সাফ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ৮৭ বছরের এই কংগ্রেস নেতা। পরে এই যুক্তি নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল আজিজ কুরেশি। তার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, “কুরেশিকে সরানোর চেষ্টাই হয়নি। সে কথাই সুপ্রিম কোর্টে জানাবে কেন্দ্র।” কিন্তু চাপ দিয়ে রাজ্যপালদের সরানোর উদ্যোগ যে শেষ হয়নি তা শঙ্করনারায়ণনকে বদলি করা থেকেই স্পষ্ট।
আজ শঙ্করনারায়ণন বলেন, “আমার পক্ষে মিজোরামে যাওয়া সম্ভব নয়। সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে যাব।” তাঁর কথায়, “বিভিন্ন রাজ্যে রাজভবনে থাকার সময়ে আমি কখনও রাজনীতি করিনি। বিজেপি, শিবসেনা-সহ সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আমার ভাল সম্পর্ক ছিল।” কিন্তু তিনি কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসারই শিকার হলেন? শঙ্করনারায়ণনের জবাব, “সেটা বোঝা সংবাদমাধ্যমের কাজ। সাংবাদিকরা যথেষ্ট বুদ্ধিমান।”
শঙ্করনারায়ণনকে সরানোর পরে মহারাষ্ট্রের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গুজরাতের রাজ্যপাল ও পি কোহলিকে। বিজেপি সূত্রে খবর, যে সব রাজ্যপালকে নরেন্দ্র মোদী সরকার সরাতে চায় তাঁদের তালিকায় ৮৭ বছরের এই কংগ্রেস নেতা গোড়া থেকেই ছিলেন। মহারাষ্ট্রে সামনেই নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে মুম্বইয়ের রাজভবনে প্রবীণ কংগ্রেস নেতার উপস্থিতি বিজেপি-র পক্ষে খুবই অস্বস্তিকর। ও পি কোহলি এক সময়ে বিজেপি-র দিল্লি শাখার প্রধান ছিলেন। এখন মহারাষ্ট্রে তাঁর উপস্থিতিই ‘নিরাপদ’ বলে মনে করছে কেন্দ্র।
তবে রাজ্যপালদের সরাতে এই চাপের কৌশল নিয়ে চিন্তিত অনেক শিবিরই। কুরেশির মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয় সে দিকে তাকিয়ে অনেকেই।