জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে কাশ্মীর-প্রশ্নই বড় চ্যালেঞ্জ মোদীর

জি-৭-এর বৈঠকের ফাঁকেই রবিবার রাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মোদীর। জনসনের সঙ্গে মোদীর বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

কাশ্মীর নিয়ে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির দিকে গত প্রায় এক মাস ধরে সতর্ক নজর রাখছে গোটা দুনিয়া। তার মধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের সমুদ্রপারের বিয়ারিৎজ় শহরে একাধিক রাষ্ট্রনেতার মুখোমুখি হতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জি-৭ শীর্ষ বৈঠকের আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে রবিবার ওই শহরে পৌঁছন মোদী। তাঁর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে বক্তৃতা। আমেরিকা-সহ বেশ কিছু দেশের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকও করবেন তিনি। কূটনৈতিক সূত্রে খবর, সেই সব বৈঠকে ঘুরেফিরে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আলোচনাই প্রাধান্য পেতে চলেছে।

Advertisement

জি-৭-এর বৈঠকের ফাঁকেই রবিবার রাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মোদীর। জনসনের সঙ্গে মোদীর বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কাশ্মীর নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে কথা হয়েছে কি না, তা রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। কিছু দিন আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে চিনের সঙ্গে কিছুটা সুর মিলিয়ে ব্রিটেনও জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার সুপারিশ করায় এই বৈঠকের দিকে কিছুটা উদ্বেগ নিয়েই তাকিয়েছিল সাউথ ব্লক। এ দিন মোদীর কথা হয় গুতেরেসের সঙ্গেও। কাশ্মীর নিয়ে উত্তপ্ত আবহের মধ্যে গুতেরেসের সঙ্গে মোদীর এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। দু’জনের মধ্যে ‘সফল আলোচনা’ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও বৈঠক হবে মোদীর। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র সঙ্গেও নৈশভোজে কথা হবে তাঁর।

Advertisement

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ পাঁচ বার জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিলেও এই গোষ্ঠীর বৈঠকে এই প্রথম বার আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত থাকছেন মোদী। রাশিয়াকে এই গোষ্ঠী থেকে বাদ দেওয়ায় জি-৮ এখন পরিণত হয়েছে জি-৭-এ। কিন্তু পশ্চিমের বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে এর গুরুত্ব প্রায় একই রয়েছে।

এই সম্মেলনে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির কাছে আবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে বসার আগেই ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কাশ্মীর নিয়ে মোদীর সঙ্গে আলোচনা করতেই তিনি বিশেষ ভাবে উৎসুক। কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি যে মধ্যস্থতাতেও উৎসাহী, তা গত দু’সপ্তাহে বার তিনেক বলেছেন ট্রাম্প। সোমবার ভারত-মার্কিন বৈঠকের আগে এক মার্কিন কর্তা সেই বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, ‘‘আমেরিকা কাশ্মীরের দিকে নজর রাখছে। বিষয়টি নিয়ে শান্তি বজায় রাখতে এবং কোনও প্ররোচনামূলক কথা না বলার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে। প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিতও দিয়েছেন, তিনি গোটা অঞ্চলের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি কমাতে মধ্যস্থতা করতে রাজি।’’ এখানেই না থেমে মার্কিন কর্তাটি বলেছেন, ‘‘আঞ্চলিক সংঘাত কমানোর জন্য মোদীর কী পরিকল্পনা রয়েছে, সেটা ট্রাম্প জানতে চাইবেন। কাশ্মীরে মানবাধিকারের বিষয়টি যাতে অগ্রাধিকার পায়, সেই ব্যাপারে ভারত সরকারের ভাবনাচিন্তাও শুনতে চাইবেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে ভারতের বড় ভূমিকা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement