ভারত সরকার কঠোর বার্তা দিতেই সতর্ক হয়ে গেল গুগল। জম্মু-কাশ্মীর এবং অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখানো শুরু হল গুগল ম্যাপে।
জম্মু-কাশ্মীর এবং অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে বিবাদ থাকায় ওই দুই এলাকাকে এত দিন ভারতের অংশ হিসেবে না দেখিয়ে বিতর্কিত এলাকা হিসেবেই দেখাত গুগল ম্যাপ। অর্থাৎ, গুগলে ভারতের যে ম্যাপ দেখানো হত, তাতে ভারতের সব দিকেই আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুস্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত থাকলেও, অরুণাচল প্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত ডটেড লাইন বা বিন্দু দিয়ে ঘেরা থাকত। শুধু গুগল ম্যাপে অবশ্য নয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানই ম্যাপে ভারতের এই সব এলাকাকে বিতর্কিত হিসেবেই চিহ্নিত করত।
জম্মু-কাশ্মীরের বেশ খানিকটা অংশ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর বলে যে অঞ্চল পরিচিত, তা পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কাশ্মীরের উত্তর-পশ্চিমে আকসাই চিন নামে যে অংশ পরিচিত, তা রয়েছে চিনের নিয়ন্ত্রণে। অরুণাচল প্রদেশের কোনও অংশই অবশ্য ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নেই। কিন্তু চিন অরুণাচলকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। গুগল ম্যাপে এই তিনটি এলাকাকেই বিতর্কিত হিসেবে দেখানো হত। অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর এবং অরুণাচলে ঢোকার আগেই ভারতের সীমান্তরেখা শেষ হয়ে গিয়েছে বলে দেখানো হত। জম্মু-কাশ্মীর ও অরুণালের চতুর্দিকের সীমান্ত ডটেড লাইন দিয়ে চিহ্নিত করা থাকত। বোঝানোর চেষ্টা হত যে ওই অঞ্চল আসলে কোন দেশের, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
আরও পড়ুন:
৮০০ বছরের বালক ‘আত্মীয়’দের খুঁজে পেল রুশ বিজ্ঞানীদের সাহায্যে
কেন্দ্র সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ভারত সরকারের প্রকাশ করা ম্যাপে ভারতের সীমান্ত যে ভাবে চিহ্নিত করা রয়েছে, তা যদি কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির তরফে প্রকাশ করা ম্যাপে বিকৃত করে দেখানো হয়, তা হলে ভারত কঠোর পদক্ষেপ নেবে। যে ব্যক্তি বা সংস্থা বা মিডিয়া ভারত সরকারের প্রকাশিত ম্যাপ না মেনে ভারতের সীমান্তকে অন্য ভাবে চিহ্নিত করবে, সেই ব্যক্তি বা সংস্থা বা মিডিয়ার ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। অভিযুক্তদের সাত বছর পর্যন্ত জেলও খাটতে হতে পারে।
ভারত সরকারের এই সতর্কবার্তাকে একেবারেই অগ্রাহ্য করতে চায়নি বিশ্বের জনপ্রিয়তম সার্চ ইঞ্জিন গুগল। সরকারি নির্দেশিকা জারি হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই নিজেদের ম্যাপ সংশোধন করেছে গুগল। গোটা জম্মু-কাশ্মীর এবং অরুণাচলকেই এ বার ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখানো হচ্ছে।