১৪ জন বিদ্রোহীর বিধায়ক পদ খারিজ, ইয়েদুরাপ্পার শক্তিপরীক্ষা আজ

কংগ্রেস ও জেডিএসের ১৭ জন বিদ্রোহী বিধায়ক স্পিকারকে ইস্তফাপত্র দিয়ে মুম্বইয়ে ঘাঁটি গেড়ে থাকায় ক’দিন আগেই এইচডি কুমারস্বামী সরকারের পতন হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৩১
Share:

বি এস ইয়েদুরাপ্পা। ছবি: পিটিআই।

কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা সরকারের আস্থাভোটের এক দিন আগে, আজ ১৪ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করে দিলেন বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমার। এঁদের ১১ জন কংগ্রেসের, ৩ জন জেডিএসের। এই নিয়ে কর্নাটকের মোট ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ হল। এর ফলে আগামিকাল বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জটিলতা কেটে গিয়েছে।

Advertisement

কংগ্রেস ও জেডিএসের ১৭ জন বিদ্রোহী বিধায়ক স্পিকারকে ইস্তফাপত্র দিয়ে মুম্বইয়ে ঘাঁটি গেড়ে থাকায় ক’দিন আগেই এইচডি কুমারস্বামী সরকারের পতন হয়েছে। স্পিকার তাঁদের ইস্তফা গ্রহণ করছেন না— এই অভিযোগ তুলে ওই বিধায়কেরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। তবে শীর্ষ আদালতে রমেশ কুমার জানিয়ে দেন, শুধু ইস্তফার প্রশ্ন নয়, ওই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের প্রস্তাবও তাঁর বিবেচনাধীন। কংগ্রেস ও জেডিএসের তরফে সেই আর্জি জানানো হয়েছিল। কুমারস্বামীর আস্থাভোটের সময়ে বিদ্রোহী বিধায়কদের বিধানসভায় যোগ দিতে বাধ্য করা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিলেও একই সঙ্গে জানিয়ে দেয়, ওই বিধায়কদের ব্যাপারে স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার স্পিকারের রয়েছে। এর পরেই ইস্তফা গ্রহণ করার বদলে দু’দফায় ওই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করে দিলেন রমেশ কুমার। বিজেপি শিবিরে খবর ছিল, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ব্যাপারে এত দিন কোনও পদক্ষেপ না করায় স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে দল।
এই পরিস্থিতিতে ইয়েদুরাপ্পার আস্থাভোটের ২৪ ঘণ্টা আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে কিছুটা স্বস্তি দিলেন স্পিকার। তবে অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে আগামিদিনে সরকার চালাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চাপের মধ্যে থাকতে হবে।

২২৫ সদস্য বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভায় (এক জন মনোনীত সদস্য) সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১১৩ জনের সমর্থন। তবে স্পিকার মোট ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করায় বিধানসভার সদস্যসংখ্যা হল ২০৮। বিজেপি সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হবে ১০৫ জনের সমর্থন। বিজেপির নিজেরই শক্তি ১০৫। ইয়েদুরাপ্পা এ দিন দাবি করেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার ব্যাপারে তিনি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।

Advertisement

দলত্যাগ বিরোধী আইনে সদস্যপদ খারিজ হল যে বিধায়কদের, তাঁরা বর্তমান বিধানসভা ভঙ্গ না হওয়া পর্যন্ত ভোটে লড়তে পারবেন না। অর্থাৎ, তাঁদের পক্ষে রাজ্যের মন্ত্রিত্ব পাওয়া সম্ভব হবে না। স্বাভাবিক ভাবেই কংগ্রেস ও জেডিএস স্পিকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া টুইট করে বলেছেন, ‘‘স্পিকারের সিদ্ধান্ত গোটা দেশের সেই সব জনপ্রতিনিধির কাছে বার্তা, যাঁরা বিজেপির ফাঁদে পা দিতে চাইছেন।’’ টুইটারে জেডিএস লিখেছে, ‘‘এই সিদ্ধান্ত লোভী রাজনীতিকদের জন্য একটা শিক্ষা। সংবিধানের বিরুদ্ধে গেলে মাসুল দিতেই হবে।’’ শাস্তি মেলার পরে জে ডি এসের এ এইচ বিশ্বনাথ জানান, স্পিকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোর্টে যাবেন তাঁরা।

আরও পডু়ন: এমএ পাশ, পেটের দায়ে পালিশ করেন জুতো

মোট ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ার পরে স্পিকার রমেশ কুমার এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। কেউ কেউ বলছেন, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাওয়ায় বিজেপির পক্ষেও স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা সহজ হবে না। কর্নাটক বিধানসভায় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অতিরিক্ত ব্যয় বরাদ্দ পাশ করাতে হবে। সে কারণেই তিনি সোমবারই আস্থাভোটে যেতে চাইছেন বলে রাজ্যপাল বাজুভাই বালাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। রাজ্যপাল তাতে সম্মত হয়েছেন।

এ দিনই জেডিএস নেতা এইচ ডি দেবগৌড়া বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস ও জেডিএস জোটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের মনোভাবের উপর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement