প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পক্ষে তৈরি হওয়া সহানুভূতির হাওয়া যাতে কর্নাটকের ভোট ময়দানে ঝড় না তুলতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আজ সে রাজ্যের জনসভায় বাক্যবাণে কংগ্রেসকে বিদ্ধ করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এটি তাঁর সাম্প্রতিক সময়ে সপ্তম কর্নাটক সফর। বিপুল পরিমাণ অর্থের সরকারি প্রকল্পগুলির একের পর এক শিলান্যাস করেছেন তিনি গত কয়েক মাসে। আজই ছিল তার শেষ দফা। দেবাণগেড়ে-র জনসভায় দাঁড়িয়ে মোদীর বক্তব্য, “কংগ্রেস বলেছিল মোদী তোমার কবর খুঁড়ব! কিন্তু তারা জানে না কর্নাটকের মানুষের মনে স্বপ্ন রয়েছে। সে স্বপ্ন হল মোদী তোমার পদ্ম ফুটবে!”
কংগ্রেসের রাজনীতিকে ‘নোংরা রাজনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করে মোদী আজ বলেছেন, দেশে উন্নয়নের রাজনীতি এনেছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, “আমাদের দেশ নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছে বহু দিন। এক সময়ে শুধুই দোষারোপ আর অভিযোগ করা হত। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে আমরা শুধুমাত্র হাওয়াবাজি বন্ধ করে উন্নয়নের রাজনীতিকে সামনে নিয়ে এসেছি।”
কর্নাটকের পুরনো কংগ্রেস জমানার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “দীর্ঘদিন ধরে এই রাজ্য সুযোগসন্ধানী এবং স্বার্থপর সরকারের হাতে লাঞ্চিত হয়েছে। ফলে উন্নয়ন ধাক্কা খেয়েছে। সে কারণেই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য এখন বিজেপির স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন।” তাঁর কথায়, “বিনা মূল্যে রেশন থেকে বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু হয়েছে। সরকার দরিদ্রদের যত্ন নিচ্ছে।” জনসভায় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই, বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে যে রাজ্যেই ভোট প্রচারে গিয়েছেন মোদী, ‘ডাবল ইঞ্জিন’-এর তত্ত্ব প্রচার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কর্নাটকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বলেছেন, “কর্নাটক মনস্থির করে নিয়েছে। কর্নাটকবাসী ডাবল ইঞ্জিন সরকারকেই রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। বিজেপি রাজ্যের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিকে তালিকার একেবারে শীর্ষে রেখেছে। বিজেপি চায় ভারতের অগ্রগতির আসনে বসুক কর্নাটক। কংগ্রেস শুধু তাদের কিছু নেতার পকেট ভরাতে ব্যস্ত।”
জনসভার আগে প্রধানমন্ত্রী শনিবার বেঙ্গালুরু মেট্রো প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৩.৭১ কিলোমিটার প্রসারিত পথের উদ্বোধন করেন। তিনি কর্নাটকের চিক্কাবাল্লাপুরে শ্রী মধুসূদন সাই ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চেরও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিছু দল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থপরতা এবং ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য ভাষা নিয়ে খেলা খেলেছে। কিন্তু, ভাষাকে প্রকৃত অর্থে সমর্থন করার জন্য যা করা দরকার, তা তারা করেনি।”
এর পাশাপাশি, চিক্কাবল্লাপুরের সভায় বিজেপির উন্নয়নের রাজনীতিকে তুলে ধরে মোদী বলেন, “সকলের চেষ্টায় ভারত আজ উন্নত রাষ্ট্র হওয়ার পথে।”
অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তাবেষ্টনীর বাধা ভেঙে তাঁর দিকে এগোনোর চেষ্টা করেছেন এক যুবক। জানুয়ারির পরে আবার প্রায় একই ঘটনা কর্নাটকে। বিজেপি শাসিত ভোটমুখী রাজ্যে শনিবার নির্বাচনী রোড শো করছিলেন মোদী। অভিযোগ, সে সময়ে ব্যারিকেড টপকে প্রধানমন্ত্রীর দিকে দৌড়ে এগোনোর চেষ্টা করেন বাসবরাজ কাটেগি নামে এক যুবক। যদিও তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যায় এসপিজি। ওই যুবক মোদীকে সামনে থেকে দেখতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।