ছবি: সংগৃহীত।
গণধর্ষণের শাস্তি হিসাবে জরিমানা-সহ যাবজ্জীবন কারাবাসের বদলে ফাঁসির সুপারিশ করল কর্নাটক হাইকোর্ট। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা আইনসভার কাছে ওই সুপারিশ করেছে আদালত। আদালত মনে করে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা যা গণধর্ষণের মামলায় কার্যকর করা হয়, তাতে রদবদলের প্রয়োজন। মঙ্গলবার এই সুপারিশ করে বিচারপতি বি বীরাপ্পা এবং বিচারপতি কে নটরাজনের ডিভিশন বেঞ্চ।
এ দিন ২০১২ সালের একটি গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় স্থগিত করে কর্নাটক আদালত। ওই মামলায় বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ল’কলেজ অব ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি-র এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে ৭ জনের বিরুদ্ধে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্বাধীনতার ৭ দশক পার হয়ে গেলেও সমাজ থেকে ধর্ষণের মতো অভিশাপের অবসান ঘটেনি। ভারতীয় মহিলার কাছে এখনও তা আশঙ্কার বিষয়। এ নিয়ে মহাত্মা গাঁধীর স্বাধীনতার সম্পর্কিত উক্তিরও উল্লেখ করেন বিচারপতিরা। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘যে দিন মহিলারা রাতে অবাধে চলাফেরা করতে পারবেন, সে দিন ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করবে।’’ এ দিন ওই উক্তি দিয়ে বিচারপতিরা বোঝান, মহাত্মার স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় সমাজ।
ডিভিশন বেঞ্চ আরও বলেছে, ‘‘আম জনতা-সহ আইনসভা, বিচারব্যবস্থা এবং সংবাদমাধ্যম, যাকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলে মনে করা হয়— সেই সবের একত্র হয়ে শুভবুদ্ধি জাগ্রত করার এটাই সঠিক সময়। যাতে ক্যানসারের থেকেও বেশি বিপজ্জনক ধর্ষণের অভিশাপকে এই মহান দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের থেকে রোখা যায়।’’
আরও পড়ুন: ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে গালওয়ান নিয়ে চিনকে কড়া বার্তা পম্পেয়োর
আরও পড়ুন: ফরিদাবাদে ‘লভ জিহাদ’, ভরদুপুরে কলেজের সামনেই তরুণীকে গুলি করে খুন
সমাজে ধর্ষণের মতো অপরাধ রুখতে বিচারব্যবস্থা তথা বিচারকদের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘ আমরা বিচারকেরা সমাজের অভিভাবক। যদি সমাজে মেয়েদের বা মহিলাদের জন্য চিন্তা এককথায় বলা যায়, তা হল— কোনও কন্যাসন্তানের উপর আক্রমণ আসলে আমাদের কন্যাকেই আক্রমণ করা।’’