আজ কোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, তাঁদের আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন। তিনি রাজ্যের কিছু নির্দেশিকার জন্যে অপেক্ষা করছেন। প্রভুলিঙ্গের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
ফাইল চিত্র।
কর্নাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার বিরোধিতা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে আজ ছিল পঞ্চম দিন। তবে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল প্রভুলিঙ্গ নাভাদগির অনুরোধে শুনানি স্থগিত রাখল হাই কোর্ট। আগামিকাল, শুক্রবার ফের শুনানি হবে।
আজ কোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, তাঁদের আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন। তিনি রাজ্যের কিছু নির্দেশিকার জন্যে অপেক্ষা করছেন। প্রভুলিঙ্গের আবেদন মঞ্জুর করে শুনানি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট। উচ্চ আদালতের ফুল বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, রাজ্য সরকার চাইলে এ প্রসঙ্গে সরকারি নির্দেশিকা বদলাতে পারে।
গত কালই আদালতে দাঁড়িয়ে অভিযোগকারিণীদের আইনজীবী রবি বর্মা প্রশ্ন তুলেছিলেন, দুপাট্টা, পাগড়ি, চুড়ি, ক্রস, টিপ-সহ অনেক ধর্মীয় প্রতীকই নিয়মিত পরছেন মানুষ। তা হলে শুধু হিজাবকেই আলাদা করে দেখা হচ্ছে কেন। শুধুমাত্র একটি ধর্মের পোশাককে আলাদা করা নিয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি শুধু আমাদের বৈচিত্রের কথাই তুলে ধরতে চাইছি। আমার জিজ্ঞাসা, সরকার শুধু হিজাবকেই আলাদা করে দেখছে কেন এবং কেনই বা শুধু তা নিয়েই বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে? চুড়িও পরা হয়, তা কি ধর্মীয় প্রতীক নয়? তা হলে কেন শুধু এই মুসলিম মেয়েগুলিকে আলাদা করা হচ্ছে?’’ তাঁর দাবি, এটি সংবিধান বিরোধী। রবির আরও বক্তব্য, ‘‘এ তো কোনও এক ধর্মের প্রতি বৈষম্য ছাড়া কিছুই নয়। কোনও নোটিস নেই, সোজা ক্লাস থেকে বার করে
দিলেন কর্তৃপক্ষ!’’
ডিসেম্বরের শেষে উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরে আসায় ছয় ছাত্রীকে ক্লাস করতে দেননি কর্তৃপক্ষ। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলা দায়ের করেন এক ছাত্রী। শুনানি চলছে সেই মামলারই। ইতিমধ্যে জল অনেক দূর গড়িয়েছে। ক্লাসে হিজাব পরার বিরোধিতার অভিযোগ উঠেছে কর্নাটকের আরও কিছু কলেছে। পাল্টা গেরুয়া চাদর পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন পড়ুয়াদের আর এক অংশ। বাড়তে থাকা গোলমালের জেরে স্কুল-কলেজ কয়েক দিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল বিজেপি শাসিত রাজ্যটি। দিন দুই হল, আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশ মেনে ফের স্কুল-কলেজ খুলেছে। সেই নির্দেশে ইউনিফর্ম ছাড়া কোনও রকম ধর্মীয় পোশাক পরে ক্লাসে না আসার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। বিষয়টি নিয়ে আজ মুসলিম বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ। আদালতের নির্দেশ মেনে আপাতত মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসে ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কলেজের ইউনিফর্ম বা পোশাক বিধি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন। বর্তমানে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক চলছে। আমরা নতুন বিধির জন্য হাই কোর্টের রায়ের অপেক্ষা করছি।’’
অন্য দিকে রাজ্যের গ্রামন্নোয়ন এবং পঞ্চায়েত মন্ত্রী কে এস ঈশ্বরাপ্পার পদত্যাদের দাবিতে আজ বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। গেরুয়া পতাকা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করার দাবিও ওঠে। হিজাব-বিতর্কের মাঝেই ঈশ্বরাপ্পা বলেছিলেন, ‘‘এ দেশ এক দিন হিন্দুরাষ্ট্র হবে। লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার বদলে উড়বে গেরুয়া পতাকা।’’ ইশ্বরাপ্পা অবশ্য এখনও তাঁর মত ও মন্তব্যে অনড়।